আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির (BJP4Bengal) নেতৃত্বের সঙ্গেই রাজ্য দলের সাংগঠনিক কাঠামোর পরবর্তী রূপরেখা তৈরি হতে চলেছে। সূত্রের খবর, নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের জন্য সুকান্ত মজুমদারের জায়গায় সুব্রত চ্যাটার্জীর নাম উঠে এসেছে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এমন একজন নেতার প্রয়োজন অনুভব করছেন, যিনি দলের সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য এবং সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী।
বিজেপি নেতাদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার দিল্লি সফরে গিয়ে দলের শীর্ষ সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ এবং সুনীল বনসলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। বৈঠকে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন, সুকান্ত মজুমদারের বিকল্প, দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করা, এবং ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
কেন নতুন রাজ্য সভাপতি চাইছে বিজেপি?
বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে দল যথেষ্ট শক্তিশালী হয়নি। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দল চাইছে এমন একজন নেতা, যিনি রাজ্যে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে সক্ষম এবং দলের সর্বস্তরের কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য।
এছাড়াও, সুব্রত চ্যাটার্জীর নাম আলোচনায় আসার কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের সাফল্যের পেছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সংগঠন গঠনের দক্ষতা বিজেপির জন্য সহায়ক হতে পারে।
দোল উৎসবের আগে সভাপতির নির্বাচন?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্ব দোল উৎসবের আগেই সর্বভারতীয় সভাপতির নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করতে চায়, তাই রাজ্য পর্যায়ের সভাপতির নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ইতিমধ্যে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সভাপতির নির্বাচন হয়ে গেছে। ৫০% রাজ্যে নির্বাচনের কাজ শেষ হলেই কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
শুভেন্দুর দিল্লি সফর ও নিয়োগ দুর্নীতি বিতর্ক
শুভেন্দু অধিকারীর দিল্লি সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। সিবিআই সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে, শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছিলেন। এই নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, শুভেন্দুর দিল্লি সফর শুধু সভাপতির নির্বাচন নিয়ে নয়, বরং এই দুর্নীতি মামলাতেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নজর রাখছে।
বিজেপির ভবিষ্যৎ কৌশল
বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে নতুন নেতৃত্ব আনার মাধ্যমে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে চায়। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন আরও শক্তিশালী করার জন্য নতুন মুখ চাইছে দল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তৈরি করাই বিজেপির মূল লক্ষ্য। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা হতে পারে, যা বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
উল্লেখযোগ্য বিষয়:
- নতুন রাজ্য সভাপতির নির্বাচন
- সুকান্ত মজুমদারের বিকল্প
- দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনা
- ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি
এটি একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের চিহ্ন হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যা বিজেপির ভবিষ্যৎ কৌশল এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।