লোকাল ট্রেনে মহিলা কামরার সংখ্যা বৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে রেল অবরোধ (Dakshin Barasat Rail Agitation) করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পুরুষ যাত্রীরা। তাঁদের এই আকস্মিক অবরোধের জেরে বিভিন্ন স্টেশনে একের পর এক ট্রেন দাঁড়িয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা, বিশেষত অফিস টাইমে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শিয়ালদহ ডিভিশনের লোকাল ট্রেনগুলিতে মহিলা যাত্রীদের সুবিধার জন্য লেডিজ কামরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে ট্রেনের একদম সামনে ও পিছনে একটি করে কামরা মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকত, বর্তমানে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলস্বরূপ, স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ কামরার সংখ্যা কমে গিয়েছে।
পুরুষ যাত্রীদের অভিযোগ, এমনিতেই অফিস টাইমে লোকাল ট্রেনে ঠাসাঠাসি ভিড় থাকে। তার উপর মহিলা কামরার সংখ্যা বাড়ায় জেনারেল কামরার সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাঁদের দুর্ভোগ আরও চরমে উঠেছে। বাদুড়ঝোলা হয়ে ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পুরুষ যাত্রীরা মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ বারাসত, ধপধপি ও মথুরাপুর স্টেশনে রেল লাইনে বসে পড়েন।
বিক্ষোভকারী যাত্রীদের স্পষ্ট দাবি, অবিলম্বে লোকাল ট্রেনে মহিলা কামরার সংখ্যা কমাতে হবে। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে বহু ট্রেনেই অতিরিক্ত মহিলা কামরাগুলি প্রায় ফাঁকা যায়। অথচ পুরুষ যাত্রীদের ট্রেনে জায়গা না পেয়ে চরম কষ্টের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। এই বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না বলেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।
এই অবরোধের জেরে ব্যস্ত সময়ে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে একের পর এক লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। প্ল্যাটফর্মে বাড়তে থাকে যাত্রীদের ভিড়। গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে চরম হয়রানির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা। অবরোধের ফলে বহু ট্রেন বাতিল হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।
দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলার পর রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। রেল আধিকারিকরা অবরোধকারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর অবরোধ উঠলে ট্রেন চলাচল ধীরে ধীরে শুরু হয়। তবে এই ঘটনার জেরে এখনও বেশ কিছু ট্রেন দেরিতে চলছে।
এই ঘটনা ফের একবার লোকাল ট্রেনে যাত্রী পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর অভাবের চিত্রটি প্রকট করে তুলল। মহিলা যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য কামরা বৃদ্ধি করা হলেও, পুরুষ যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত কামরার ব্যবস্থা না থাকায় এমন অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।