Durga Puja 2025: অকাল বোধন: মহালয়ার আগেই ট্যাংরায় শুরু দুর্গাপূজা!

পুজোর (Durga Puja 2025)আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। অলিগলি থেকে বনেদি বাড়ির ঠাকুরদালান—সর্বত্রই এখন সাজো সাজো রব। চলছে শেষ মুহূর্তের জোর প্রস্তুতি। কিন্তু কলকাতার ট্যাংরার শীল লেনের দাস বাড়ির ছবিটা একেবারে অন্যরকম। এখানে বাজতে শুরু করেছে ঢাক, চলছে মন্ত্রপাঠ। কারণ, এই বাড়িতে পৌরাণিক প্রথা মেনে মহালয়ারও আগে, আদ্রা নক্ষত্রে শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপূজা।

এই অকাল বোধনের প্রধান পুরোহিত হলেন পরিবারের ছেলে প্রসেনজিৎ দাস। তাঁর দিদি, পেশায় চিকিৎসক মৌমিতা দাসও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই কাজে সাহায্য করেন। ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতি এবং পুরাণ, বেদ ও উপনিষদের প্রতি অগাধ টান থেকেই এই দুই ভাইবোন এমন একটি ব্যতিক্রমী পুজোর সূচনা করেছেন। রাধাকৃষ্ণের ঘরের পাশেই কন্যা রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা।

নবমী পর্যন্ত এই পুজো চলবে। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় আমন্ত্রণ ও অধিবাস দিয়ে শুরু হয় মূল পর্ব। এরপর সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত হয় মহাপূজা, যেখানে চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। বলির সময় দেবী রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন বলে প্রতিমার সামনে কাউকে বসতে দেওয়া হয় না। অষ্টমীর দিন অন্নভোগ হয় না, আর নবমীতে হয় কুমারী পুজো। দশমীতে দেবীকে পান্তা ও কচুর লতি দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়, আর তারপরই হয় প্রতিমা বিসর্জন।

এই অনন্য পূজার আকর্ষণেই সারা দেশ থেকে দাস পরিবারের সদস্যরা এই ক’টা দিনের জন্য ট্যাংরার বাড়িতে এসে জড়ো হন। পরিবারের পুত্রবধূ রিমা দাস জানান, এই পুজো যেন তাঁদের কাছে বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসে। শুধু নিয়ম মেনে পুজো নয়, এই বাড়ির প্রতিটি সদস্য দেবীকে পরিবারের মেয়ে হিসেবেই দেখেন। তাঁকে নিজেদের মতো করে খাওয়ানো হয়, এমনকি শোয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। সকালে ঘুম থেকে তোলার জন্য জলের ব্যবস্থা করা হয়। এই ক’টা দিন সবাই মিলে হাতে হাতে ভোগ রান্না থেকে শুরু করে পুজোর অন্যান্য সব কাজে লেগে পড়েন। ট্যাংরার শীল লেনের এই দাস বাড়ির দুর্গাপূজা তাই চিরাচরিত প্রথার বাইরে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, যেখানে ভক্তি আর ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার।

Exit mobile version