পাসপোর্টের জন্য জাল শংসাপত্র (Fake Passport) তৈরির অভিযোগে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ হুগলির সিঙ্গুর থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের (Fake Passport) নাম গণেশ চক্রবর্তী এবং অনির্বাণ সামন্ত। গণেশ সিঙ্গুরের বাসিন্দা এবং অনির্বাণের বাড়ি গণ্ডারপুকুর মাঘপাড়া এলাকায় (Fake Passport)। শনিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে (Fake Passport) ।
কীভাবে ফাঁস হল চক্র
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে বর্ধমান শহরের নতুনপল্লির বাসিন্দা রিঙ্কা দাস পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের সঙ্গে তিনি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাম দিয়ে একটি জন্ম শংসাপত্র জমা দেন। তবে, আবেদন ভেরিফিকেশনে পাঠানোর পর গোয়েন্দা দফতর জন্ম শংসাপত্রটি যাচাই করে এবং সেটি জাল বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই গোয়েন্দা দফতর বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
গ্রেফতার ও তদন্তের গতিপ্রকৃতি
১৯ ডিসেম্বর, অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান শহরের বাদামতলা এলাকা থেকে রিঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, এই জাল শংসাপত্রটি সরবরাহ করেছে স্বরূপ রায় ওরফে রামু। পুলিশ পরে স্বরূপকে বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করেই সিঙ্গুরে থাকা গণেশ চক্রবর্তী এবং অনির্বাণ সামন্তের নাম সামনে আসে।
এরপর তদন্তের অগ্রগতিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সিঙ্গুরে অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
জামিন বিতর্ক
প্রসঙ্গত, রিঙ্কাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়ায় পুলিশের ত্রুটি থাকার কারণে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গ্রেফতারের আগে নোটিস না দেওয়া এবং সঠিক গ্রেফতারের কারণ উল্লেখ না করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্তে উঠে আসা সমস্ত প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। জাল শংসাপত্র তৈরির এই চক্রে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় পাসপোর্ট তৈরি প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির আশঙ্কা আরও একবার সামনে এল, যা প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়েছে।
জাল পাসপোর্ট চক্র
অন্যদিকে, জাল পাসপোর্ট চক্রে একের পর এক গ্রেফতার হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। শনিবার প্রাক্তন এক পুলিশ অফিসার গ্রেফতার হয়। হাবড়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশকর্মী আবদুল হাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এক বছর আগেই কাজ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অভিযোগ হওয়া ১৫০টি পাসপোর্টের মধ্যে ৫২ টির ইনকয়ারিং অফিসার ছিলেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সাব ইন্সপেক্টর আব্দুল হাই। ওই প্রাক্তন অফিসারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রতি পাসপোর্টের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে নিতেন।