অকথ্য অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের পর অবশেষে কারামুক্ত তরুণী

released Loujain al-Hathloul

নিউজ ডেস্ক: প্রায় তিন বছর কারাবাসের পর মুক্ত হলেন সৌদি আরবের অন্যতম খ্যাতনামা মানবাধিকার কর্মী লুজেন-আল-হাথলুল। তাঁর গ্রেপ্তারি ঘিরে সে সময়ে দুনিয়া জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়।
সৌদিতে মহিলাদের গাড়ি চালানোয় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন, আন্দোলনে নামেন লুজেন। ২০১৮-য় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং গত ডিসেম্বরে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনে প্রায় ছ’বছরের সাজা শোনানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পরিবর্তনের ডাক, ইন্টারনেটে পোস্ট দিয়ে বিশৃঙ্খলা ছড়ানো, বিদেশি মতাদর্শের প্রচার ইত্যাদি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়। ডানপন্থী দলের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ সব করছিলেন লুজেন। সাজা শেষ হওয়ার আগেই লুজেনের বাড়ি ফেরার খবর জানিয়ে তাঁর বোন লীনা টুইট করলেও সৌদি কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

 

তবে কারামুক্ত হলেও কঠোর শর্ত মেনে চলতে হবে লুজেনকে। বছর ৩১-এর আন্দোলনকারীর কারাবাসের সময়টা ছিল অসম্ভব যন্ত্রণাময়। অকথ্য অত্যাচারের পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুখোশ পরা ব্যক্তিদের যৌন হেনস্থার শিকারও হন তিনি। অনশনে বসেন লুজেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্য মহিলা বন্দিরা। তাঁদের অভিযোগ, বেত্রাঘাতের পাশাপাশি বিদ্যুতের শক এবং নাকে মুখে জল ঢুকিয়ে অত্যাচার করা হয়। গলা টিপে ধরে ধর্ষণের হুমকিও চলে। স্বাভাবিক ভাবেই এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার। লুজেনের পরিবারের দাবি, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে অত্যাচারের কথা কোর্টও মানতে চায়নি।

বস্তুত, বুধবার লুজেনের মুক্তির পিছনে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়ে সৌদি সরকারের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করার হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মানবাধিকার রক্ষা করতে না-পারায় সৌদিকে ‘অচ্ছুৎ’ করার কথাও বলেছিলেন বাইডেন। লুজেনের মুক্তির খবরে পেন্টাগনে এক বক্তৃতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একটা ভালো খবর আছে। তা হলো, সৌদি সরকার একজন বিখ্যাত মানবাধিকার কর্মীকে মুক্তি দিয়েছে।

তিনি মহিলাদের অধিকার আদায়ে জোরালো আন্দোলন করেছেন। তাঁর মুক্তিই সঠিক সিদ্ধান্ত। বাইডেনের পাশাপাশি মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। লুজেনের মতো আরও যাঁরা বন্দি, তাঁদের বিরুদ্ধে সব মামলা খারিজ করে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ডুজারিক।