মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের স্যালাইন (Saline) কাণ্ডে প্রাণ হারাল সদ্যোজাত। দীর্ঘ ১৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলেন খাকুড়দার (Saline) বাসিন্দা রেখা সাউ। সন্তানহারা মায়ের (Saline) আকুতি, “যাঁরা আমার এই ক্ষতি করল, তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
গত ৮ জানুয়ারি প্রসব যন্ত্রণায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের মাতৃমা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন রেখা সাউ সহ আরও কয়েকজন প্রসূতি, যেমন মামনি রুইদাস, মাম্পি সিং, নাসরিন খাতুন, মিনারা বিবি। অভিযোগ, সিজারের সময় প্রসূতিদের যে স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল, তাতে সংক্রমণের কারণে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়।
এই ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় মামনি রুইদাসের। তবে তাঁর সন্তান সুস্থ রয়েছে। রেখা সাউয়ের সন্তান মারা গেলেও রেখা দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় রেখা সাউ আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “আজ সবাই সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরছে। কিন্তু আমার কোলে সন্তান নেই। আমাকে সন্তানকে ছাড়াই ফিরতে হচ্ছে। যাঁরা আমার এই ক্ষতি করল, তাঁদের বিচার চাই।” রেখার স্বামী সন্তোষ সাউও দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন।
এই ঘটনার পর মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কীভাবে এমন গাফিলতির শিকার হতে হলো প্রসূতিদের, সেই প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। প্রশাসনের তরফে তদন্তের দাবি উঠেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রোগীর পরিবার সহ স্থানীয় বাসিন্দারা সরব হয়েছেন। এখন অপেক্ষা, এমন মর্মান্তিক ঘটনার দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পরিবারগুলোর বিচার পাওয়ার দাবির কী সুরাহা হয়।
অন্যদিকে, মেদিনীপুর স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীরা রাজ্য সরকারের তুমুল সমালোচনা করেছিলেন। ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ১২ জন চিকিৎসককে কর্তব্যে অবহেলার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তারমধ্যে সিনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকরাও ছিলেন।