কলকাতা: নতুন মেট্রো রুটের উদ্বোধনে শুক্রবার কলকাতায় এসে দমদমে এক জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi in Kolkata)। এই মঞ্চ থেকে তিনি নতুন সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে কথা বলেন এবং সরাসরি রাজ্যের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। প্রধানমন্ত্রী নাম না করে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও নিশানা করেন।
নতুন সংবিধান সংশোধনী বিল এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গ
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে বলেন, “এবার লোকসভায় বিজেপি একটি বড় দুর্নীতি-বিরোধী বিল এনেছে। বাংলাকেও সেই বিলের কথা বলব।” তিনি ১৩০ তম এই বিলের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন, একজন সরকারি কর্মচারী যদি ৫০ ঘণ্টার বেশি জেলে থাকেন, তবে নিয়ম অনুযায়ী তিনি বরখাস্ত হন। কিন্তু কোনো মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী জেলে গেলে তাদের জন্য কোনো আইন নেই। এই বিল সেই শূন্যস্থান পূরণ করবে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
পার্থ-জ্যোতিপ্রিয়কে নিশানা
প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতির উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ দেখেছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে এমন একজন জেলে গিয়েছেন, যাঁর বাড়ি থেকে নোটের পাহাড় মিলেছে। তাও তিনি চেয়ার ছাড়তে রাজি ছিলেন না।” তিনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের রেশন দুর্নীতির অভিযোগের কথাও উল্লেখ করে বলেন, “তিনিও চেয়ার ছাড়তে রাজি ছিলেন না।” প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাদের কি সরকারি পদে থাকার অধিকার আছে? শিল্পমন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বনমন্ত্রী থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে জেল হেফাজতে যান।
‘জেল থেকে সরকার চালানো সংবিধানের অপমান’
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নাম না করে নিশানা করে মোদী বলেন, “মানুষ এত নিচে নেমে গিয়েছে যে জেল থেকেও সরকার চালানোর চেষ্টা করছে। এটা সংবিধানের অপমান।” তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ সম্প্রতি দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জেল থেকে সরকার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে আসন্ন রাজনৈতিক সমীকরণের পরিপ্রেক্ষিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি একদিকে যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন, তেমনই নতুন বিলের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরলেন।