ইয়েমেন সরকার কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেছে। ভারতের কাঁথাপুরম এপি-র গ্র্যান্ড মুফতি আবুবকর মুসলিয়ারের কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড, যা আগে স্থগিত ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।” সংবাদ সংস্থা এএনআই অনুসারে, মুসলিয়ারের কার্যালয় জানিয়েছে, “এর আগে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি উচ্চ-স্তরের বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যেখানে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যু সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। তবে, এখন একটি নতুন সিদ্ধান্তে, তার সাজা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে নির্ধারিত ছিল, কিন্তু তার একদিন আগে, ভারতের গ্র্যান্ড মুফতি এপি আবুবকর মুসলিয়ার ইয়েমেন সরকারের কাছে ব্যক্তিগত অনুরোধ করেছিলেন। ফলস্বরূপ, মৃত্যুদণ্ড সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ দেওয়ার বিষয়ে ভারত সরকার বা ইয়েমেন সরকারের কাছ থেকে এখনও লিখিত নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। ভারত সরকারের গৃহীত সংগঠিত কূটনৈতিক উদ্যোগ এই সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
নিমিশা চাকরির খোঁজে ইয়েমেনে যান
২০০৮ সালে, কেরালার ৩৮ বছর বয়সী নার্স নিমিশা প্রিয়া (Nimisha Priya) চাকরির খোঁজে ইয়েমেনে যান। খ্রিস্টান পরিবার থেকে আসা নিমিশা সানায় একজন ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদির সাথে একটি ক্লিনিক খোলেন। এই সময়ে, মাহদি প্রিয়াকে হয়রানি করতে শুরু করেন। মাহদি প্রকাশ্যে নিজেকে তার স্বামী ঘোষণা করেন। তিনি তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন। তিনি তাকে ইয়েমেনে থাকতে বাধ্য করেন। তবে, প্রিয়া ভারতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া তা সম্ভব হয়নি। ২০১৭ সালে, পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠে যখন তিনি মাহদিকে অজ্ঞান করে তার পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে মাহদি মারা যান এবং নিমিশার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া এবং মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ
২০১৮ সালে গ্রেপ্তারের পর, নিমিশা প্রিয়াকে ২০২০ সালে ইয়েমেনির একটি আদালত বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ইয়েমেনির রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হুথি নেতা মাহদি আল-মাশাত আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, ভারতীয় সমাজকর্মী এবং মিডিয়া এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে মামলাটি আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে আসে।