বাবার থেকে জন্মদিনের উপহার পাওয়া হল না আইনজীবী স্বামী খুনে সাজাপ্রাপ্ত অনিন্দিতার

সৌভিক সরকার, বারাসাতঃ গত মঙ্গলবার ছিল অনিন্দিতা পাল দে’ র জন্মদিন।  জন্মদিনের আগের দিনেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। আর জন্মদিনের পরের দিন বুধবার যাবজ্জীবনের সাজাই শুনতে হল রজত দে খুনে অভিযুক্ত তার স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে। জন্মদিনের উপহার হিসেবে মেয়েকে একটা দামী স্মার্ট ফোন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাবা অলোক দে। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠল না।বুধবার যাবজ্জীবন সাজাই হল অনিন্দিতার। অনিন্দিতার  ৯ হাজার টাকা দামের  একটা মোবাইল ফোন ছিল।কিন্তু গ্রেপ্তারের পরেই পুলিশ সেটা বাজেয়াপ্ত করেছিল।

অনিন্দিতার বাবা অলোক পাল বলেন,  “আমরা নিশ্চিত ছিলাম বারাসত আদালত থেকে নির্দোষ  মানিত হবে।মেয়ের জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার।গত সোমবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তাই মেয়েকে বলেছিলাম জন্মদিনের উপহার হিসেবে দামী স্মার্ট ফোন উপহার দেব। কিন্তু সেটা আর হল না। যাবজ্জীবন হওয়ায় মেয়ের জন্য খারাপই লাগছে।তবে আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব।”

এদিন বিচারক প্রথমেই সাজা সম্পর্কে জানতে চান অনিন্দিতার কাছে।অনিন্দিতা বলেন, “আমার তিন বছরের ছেলে আছে। আমি জেলে গেলে সে অনাথ হয়ে যাবে। এরপরেই তিনি বলেন ভগবান বিচার করবেন।আমি ভগবানের কাছে ঠিক আছি।”

বিচারক এরপর এই মামলার সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে বলতে বলেন মৃত রজতের বোন তার দাদাকে হারিয়েছেন।রজতের মা এবং বাবাও তাদের ছেলেকে হারিয়েছেন।স্বামী স্ত্রী পরস্পরের বিশ্বাস নিয়ে একসাথে রাতে ঘুমোতে যায়। কিন্তু এইভাবে স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন হওয়ার ঘটনা সমাজের কাছে বড় ধাক্কা।এই হত্যাকাণ্ডের ফলে স্বামী স্ত্রীর বিশ্বাসটাই ভেঙে গিয়েছে।তাই অভিযুক্তের সর্বোচ্চ সাজার দাবি করেছেন তিনি।বিচারক দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায় দান স্থগিত রাখেন বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত। ফের সাড়ে তিনটের সময় শুরু হয় এজলাশ। এর মিনিট দশেকের মধ্যেই রজত দে হত্যাকাণ্ডে তার আইনজীবী স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Exit mobile version