মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রোববার পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রুবিও মুলিনোকে জানান, ট্রাম্প বিশ্বাস করেন যে পানামা খালের এলাকায় চীনের উপস্থিতি চুক্তির লঙ্ঘন হতে পারে, যার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামার জলপথটি ফেরত দিয়েছিল। এরই মধ্যে, পানামা সিদ্ধান্ত নিয়েছে (Panama Withdrew Chaina BRI), চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) আর নবায়ন করা হবে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা তুঙ্গে। আমেরিকা চীনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে এবং এখন পানামা চীনের জন্য এক নতুন ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ঘোষণা করেছেন, তাদের দেশ আর চীনের উচ্চাভিলাষী বিআরআই প্রকল্পে অংশ নেবে না।
২০১৭ সালে পানামা চীনের এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, তবে এখন তারা এই পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করতে চাইছে না। গত কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পানামার ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, পানামা খালের মাধ্যমে চলাচলকারী চীনা জাহাজগুলো আমেরিকান জাহাজের মতো ট্যাক্স দেয় না।
পানামা বন্দর অডিট হবে
পানামার প্রেসিডেন্ট মুলিনো জানিয়েছেন, তাদের সরকার এখন নতুন অবকাঠামো প্রকল্পসহ বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে এবং পানামা পোর্ট কোম্পানির অডিটও করা হবে।
রুবিও, ট্রাম্পের পক্ষে কথা বলে মুলিনোকে সতর্ক করেছেন যে, পানামা খালের এলাকায় চীনের উপস্থিতি চুক্তির বিরুদ্ধে যেতে পারে। ১৯৯৯ সালে একটি চুক্তি হয়েছিল, যার মাধ্যমে আমেরিকা পানামার জলপথের ওপর স্থায়ী নিরপেক্ষতার ব্যবস্থা করে।
চীনের প্রভাব কমাতে হবে: আমেরিকা
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেছেন, পানামাকে এখনই চীনের প্রভাব কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও জানান, পানামাকে যদি এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে না নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তার অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
পানামা খালের গুরুত্ব
পানামা খাল একটি ৮২ কিলোমিটার (৫১ মাইল) দীর্ঘ জলপথ, যা আটলান্টিক মহাসাগরকে প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই খালের মাধ্যমে জাহাজের চলাচলের সময় অনেকটাই কমে যায়।
পানামা খালের ইতিহাস
ফ্রান্স, কলম্বিয়া ও আমেরিকা এই খালের নির্মাণে অংশ নিয়েছিল। ফ্রান্স ১৮৮১ সালে খালের কাজ শুরু করলেও তা ব্যর্থ হয়। এরপর ১৯০৪ সালে আমেরিকা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে এবং ১৯১৪ সালে খালটি চালু হয়। ১৯৯৯ সালে আমেরিকা পানামাকে এই খালের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে। এই খাল দিয়ে যাওয়া জাহাজ থেকে ভাড়া আদায় করা হয়। পানামা খাল পানামার অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।