মস্কো: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) মধ্যে, সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছুটা আশাবাদী বার্তা দিয়েছেন, তবে একই সঙ্গে তিনি ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। তার মতে, যুদ্ধের ইতি টানতে আমেরিকার মধ্যস্থতার প্রস্তাব সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার ওপর ভরসা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুতিন বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতির (Russia-Ukraine War) প্রস্তাবে আগ্রহী, তবে আমেরিকার পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের কিছু প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়েছে। আমি হয়তো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে আলোচনা করব।” তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, আমেরিকার প্রস্তাবের প্রতি তার আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষত, ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রশাসন ও তার সঙ্গেই আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করায়, রাশিয়া যে এখনও পুরোপুরি ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করতে প্রস্তুত নয়, তা ফুটে ওঠে।
এদিকে, আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনের বক্তব্য শুনে কিছুটা আশাবাদী হলেও তিনি একে “সম্পূর্ণ নয়” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “পুতিনের বক্তব্য আশাব্যঞ্জক, তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। চূড়ান্ত চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা চলছে, এবং এখন আমরা দেখব রাশিয়া আসলেই রাজি কি না।” ট্রাম্প আরও জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে বা ফোনে কথা বলতে প্রস্তুত, এবং দ্রুত এই বিষয়টির সমাধান চাইছেন। তার মতে, “যদি রাশিয়া রাজি না হয়, তবে সেটা গোটা বিশ্বের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক হবে।”
মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি মার্কো রুবিওও একই সুরে বলেন, “আমরা জানতে চাই, রাশিয়া কি নিঃশর্তে যুদ্ধবিরতিতে প্রস্তুত?”
এদিকে, ইউক্রেন ইতোমধ্যে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, যা তাদের অবস্থানকে কিছুটা শিথিল করেছে। ইউক্রেনের এই সিদ্ধান্তকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত যখন রাশিয়া এখনও চূড়ান্তভাবে যুদ্ধবিরতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
চুক্তির শর্তে, কিয়েভকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি হিসেবে ইউক্রেনে বিদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা পুতিন ইতিমধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এর আগে বলেছিলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে কোনো বিদেশি বাহিনী তাদের দেশে অবস্থান করবে, এমন কোনো অবস্থান তারা মেনে নেবেন না।
এখন প্রশ্ন উঠছে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যকার এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি কতটা কার্যকর হবে এবং আগামী দিনগুলোতে এই সংকট কতটুকু সমাধান হবে। তাছাড়া, রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্কের উত্তেজনা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের অবস্থানও এই প্রক্রিয়াকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে।