সুন্দরবনের দুর্গম পরিবেশে জীবনধারণের সংগ্রাম নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রকৃতির রুদ্ররূপ যেখানে জীবনের ঝুঁকি বাড়ায় প্রতিনিয়ত, সেখানে বঞ্চনা ও অভাবের অন্ধকারে দিন কাটানো মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালো দুটি মানবিক উদ্যোগ। বাঘের আক্রমণে স্বামীহারা বিধবা নারী ও তাদের অসহায় শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এসেছে কলকাতার ‘উৎকর্ষে আরোহণ’ এবং সন্তোষপুর আদি সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি (Sundarbans aid)।
সুন্দরবন: কাঁকড়া বা মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে স্বামী হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণা সুন্দরবনের অনেক পরিবারের নিত্য সঙ্গী। এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিতে স্বামীহারা নারীরা যখন চরম অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করেন, ঠিক তখনই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে (Sundarbans aid) মানবিকতার দুটি হাত। কলকাতার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উৎকর্ষে আরোহণ’ এবং সন্তোষপুর আদি সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি সুন্দরবনের এই পিছিয়ে পড়া মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে সম্প্রতি স্বামীহারা নারী ও তাদের ছেলে-মেয়েদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পরিধান সামগ্রী, শিক্ষা উপকরণ এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক নার্সারি শিক্ষার্থী এবং সমসংখ্যক বিধবা নারী এই সহায়তা গ্রহণ করেন। গ্রামবাসী মনে করছেন, এই সাহায্য তাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।
‘উৎকর্ষে আরোহণ’-এর অন্যতম সদস্য অনুপম মজুমদার জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কাজ করছেন। তিনি বলেন, “গ্রামের একমাত্র স্কুলের খুবই দুরবস্থা। কিন্তু এতটা যে খারাপ অবস্থা, তা স্কুলে না এলে জানতেই পারতাম না। এদের কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পেরে ভালো লাগছে।”
সন্তোষপুর আদি সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোক্তা সুদীপ মজুমদার এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, কলকাতায় ফিরে গিয়ে তারা এই বছর তাদের দুর্গাপূজার বাজেট কাটছাঁট করে স্কুলটির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কিছু করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন। এই সামান্য সাহায্য পেয়ে ছোট ছোট শিশুরা, তাদের পরিবারের সকলে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অত্যন্ত আনন্দিত। তাদের চোখে-মুখে ছিল প্রাপ্তির অপার আনন্দ, যা এই মানবিক উদ্যোগের সার্থকতা প্রমাণ করে।