T20 World Cup: “বিশ্বকাপে খেলতে পারলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কেন নয়”, অস্ট্রেলিয়াকে রশিদের প্রশ্ন

২০২২ টি২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) খুব কাছে গিয়েও হারতে হয়েছিল। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তো হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল। দুটি ম্যাচেই আফগানিস্তানের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সেই ম্যাক্সওয়েল গতকালও অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা হয়ে ওঠার আভাস দিয়েছিলেন। তবে গুলবদিন নাইবের কেরিয়ারের সেরা বোলিংয়ে তা আর হয়নি।

সেন্ট ভিনসেন্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে আফগানিস্তান, যা তাদের টি২০ বিশ্বকাপের  (T20 World Cup) সেমিফাইনালে খেলারও সম্ভাবনা জাগিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ানদের বিপক্ষে এমন জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। তবে একটা আক্ষেপও ঝরেছে রশিদের কণ্ঠে। আক্ষেপটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে না পারার।

২০১২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলতে গিয়ে শারজায় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ওয়ানডে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। এর পর থেকে দুই দল শুধু আইসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্টেই মুখোমুখি হয়েছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে হোবার্টে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ানদের। আর গত বছরের মার্চে আরব আমিরাতে হওয়ার কথা ছিল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।

কিন্তু আফগানিস্তানে তালিবান সরকার গঠনের পর মেয়েদের ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা ও উচ্চশিক্ষায় কড়াকড়ি আরোপের প্রতিবাদে রশিদ-নবীদের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ ও ওয়ানডে সিরিজ, দুটিই বাতিল করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। আগামী আগস্টে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার, যা আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনার (এফটিপি) অংশ। সেই সিরিজও স্থগিত করে দিয়েছে সিএ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক জয়ের পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাতিলের আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও উঠেছে প্রশ্ন।

সেখানে পেশাদারত্বের জায়গা থেকে নিজের ভাবনা জানানোর চেষ্টা করেছেন রশিদ। আফগান অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড়, খেলাধুলা পছন্দ করি। আমাদের দেশের মানুষ খেলাধুলা ভালোবাসে। আগেও বলেছি, আমার দেশের মানুষের কাছে ক্রিকেটই একমাত্র আনন্দের উৎস। আফগানিস্তানে এটাই একমাত্র উপলক্ষ, যেটা নিয়ে মানুষ উদ্‌যাপন করতে পারে। আর আমরা যদি সেটাকেই আমাদের থেকে দূরে রাখি, তাহলে আফগানদের (উদ্‌যাপন করার জন্য) আর কী থাকবে, আমি জানি না।’

রশিদ আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেকোনো দলের বিরুদ্ধে খেলতে পারা আনন্দের ব্যাপার। নিয়মিত খেললে আমাদের ক্রিকেটের আরও উন্নতি হতে পারে। তবে ক্রিকেটে কিছু জিনিস কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এ নিয়ে আমরা কিছুই করতে পারি না। যদি কিছু করতে পারতাম, যদি কোনো সমাধান থাকত, আমরা খুশি হতাম। এর (আফগানদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার না খেলার) সমাধান কী, আমার জানা নেই।’

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ স্থগিত করায় বিগ ব্যাশ লিগ না খেলার হুমকিও দিয়েছিলেন রশিদ। যদিও পরে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। তবে আগের মতোই জাতীয় দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে না পারার আক্ষেপ আছে তাঁর। ওয়ার্নার–ম্যাক্সওয়েলরা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে খেলতে পারলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কেন নয়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রশিদ, ‘যেসব বিষয় ক্রিকেটারদের নিয়ন্ত্রণে নেই, ক্রিকেটও যেগুলোর সমাধান করতে পারবে না, সেসব বিষয় খেলাধুলায় আনা উচিত নয়। যদি অন্য কোনো সমাধান থাকে, সেটা প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু এমনটা ভাববেন না যে রাজনীতি ও ক্রিকেট দিয়ে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করবেন। আমরা যদি বিশ্বকাপে খেলতে পারি, তাহলে কেন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে খেলব না?’

Exit mobile version