নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ যে দেশের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, তা আবারও প্রমাণ করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে (TMC on International Women’s Day) তৃণমূলের মহিলা শাখা বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করছে, যা নারীদের শক্তিবৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই নারীদের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প যেমন কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার— এগুলো রাজ্যের নারীদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে রাজ্যে নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বেড়েছে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বড় সাফল্যের পর তৃণমূল কংগ্রেস এখন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনোনিবেশ করছে। এরই অংশ হিসেবে নারী দিবসে রাজ্যের সর্বত্র মহিলাদের অংশগ্রহণে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে।
৮ মার্চ শনিবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (TMC on International Women’s Day) তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা শাখা রাজ্যজুড়ে একযোগে মিছিলের আয়োজন করছে। কলকাতায় মূল মিছিলটি বিকেল চারটেয় রবীন্দ্রসদন থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন মহিলা তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা-সহ একাধিক বিধায়ক ও সাংসদ।
তবে রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার কারণে, এই মিছিলে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখা হয়েছে। পরিবর্তে পোস্টার, ব্যানার ও হোর্ডিং-এর মাধ্যমে বার্তা পৌঁছানো হবে।
প্রতি বছরের মতো এবছরও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দিতে নতুন স্লোগান ও পোস্টার তৈরি করা হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্লোগান নির্ধারণ করবে এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই কর্মসূচি দলকে মহিলাদের মধ্যে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে পারে। বিশেষ করে, রাজ্যের নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও গ্রামীণ মহিলারা তৃণমূলের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের সুবিধাভোগী হওয়ায়, এই প্রচার তাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলতে পারে।
বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিজেপি, নারী সুরক্ষা ও দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলের এই প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। তবে, তৃণমূলের নারী সংগঠনের এই সক্রিয়তা দলকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
তবে নারী দিবসে তৃণমূলের এই কর্মসূচি নারীর ক্ষমতায়নকে সামনে এনে দলীয় সংগঠনকে আরও মজবুত করার কৌশল হিসেবেও কাজ করবে। এটি একদিকে যেমন নারীদের মধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তা বাড়াবে, তেমনই রাজনৈতিক ভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।