তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা নিয়ে কারচুপি এবং অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে। সোমবার, দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন অভিযোগ করেছেন, একই এপিক নম্বরের ভোটার কার্ড দুটি রাজ্যে থাকতে দেখা যাচ্ছে, যা ভোটের সময় ভিনরাজ্য থেকে ভোটার আনার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি দাবি করেছেন, “এখনও নির্বাচন কমিশন তাদের ভুল স্বীকার করেনি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুল স্বীকার না করলে আমরা নতুন তথ্য সামনে আনব।”
তৃণমূলের (TMC) নেতারা নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপির মধ্যে যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন, এবং দাবি করেছেন যে এই ধরনের ভুল নিয়ে কমিশন অবিলম্বে ভোটার তালিকা সংশোধন করুক। ডেরেক ও’ব্রায়েন ১০০ দিনের মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন না হলে আরও তথ্য প্রকাশ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এপিক নম্বরের ডুপ্লিকেট বিষয়ে তৃণমূলের অভিযোগ
সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এবং কীর্তি আজাদও একই অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। সাগরিকা ঘোষ প্রশ্ন করেছেন, “গাড়ির লাইসেন্স বা আধার কার্ডের নম্বর ডুপ্লিকেট হয় না, তাহলে এপিক নম্বর কিভাবে ডুপ্লিকেট হয়?” তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা একটি গুরুতর কেলেঙ্কারি, এবং এটি ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে। তাদের দাবি, যদি প্রয়োজন হয়, তারা বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যোগাযোগকারী ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করতে প্রস্তুত।
তৃণমূল নেতারা আরও বলেন, যদি কমিশন তাদের দাবি মানতে না আসে, তারা অপরাধে জড়িতদের নাম প্রকাশ করবেন এবং সরকারের কাছে যথাযথ পদক্ষেপের দাবি জানাবেন।
নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা
এদিকে, নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, দুটি রাজ্যে একই এপিক নম্বরের ভোটার কার্ড থাকা একটি অসঙ্গতি নয়। কমিশন জানায়, এপিক নম্বর ইউনিক না হয়ে রাজ্য নির্বাচন কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্ধারিত সিরিজ অনুযায়ী থাকতে পারে। কমিশনের দাবি, এতে কোনোভাবেই ভোটাররা ভুয়ো নয়। তবে কমিশন ভবিষ্যতে ইউনিক এপিক নম্বরের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবে।
বিজেপির বক্তব্য
তৃণমূলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এপিক নম্বর ইউনিক নয়, এটি একেক রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারা নির্ধারিত হয়।” তিনি জানান, শুধু এপিক নম্বরের মিল থাকলেই তা কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না, তবে যদি ভোটারের নাম, বাবার নাম, বয়স এবং ভোট কেন্দ্রের তথ্য এক হয়ে যায়, তবেই তা চিন্তার বিষয়।
এদিকে, তৃণমূলের অভিযোগের সাথে একমত হতে দেখা যায়নি বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি দাবি করেন, “বাংলায় ১৭ লক্ষ ভোটারের নাম, বাবার নাম, বয়স এবং ভোটকেন্দ্রের মধ্যে মিল পাওয়া গেছে, যা আমরা নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি।”
এটি প্রমাণ করে যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে তীব্র বিরোধ চলছে, এবং এই বিতর্কের পরবর্তী পর্যায়টা এখন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।