সিউড়ি শহর সংলগ্ন মিনি স্টিল এলাকায় তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে মঙ্গলবার চরম উত্তেজনা ছড়াল। এক সশস্ত্র দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের সময় পুলিশের আইসির (ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ) কলার ধরে টানাটানি করেন এক যুবক (TMC)। এই ঘটনার জেরে এলাকায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় (TMC) এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশ ও র্যাফকে (TMC)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবু আনসারি নামে এক যুব তৃণমূল নেতার সঙ্গে ইকবাল আনসারি নামে অপর এক ব্যক্তির দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। ইকবালের দাবি, তিনিও তৃণমূলকর্মী। তবে বাবুর দলবল ইকবালকে বিজেপি সমর্থক বলে অভিযোগ করে। মঙ্গলবার সকালে বাবু আনসারি ও তাঁর এক সঙ্গী সশস্ত্র অবস্থায় গ্রামে ঢুকে হুমকি দিতে শুরু করলে স্থানীয়রা তাঁদের ধরে ফেলে। শুরু হয় গণধোলাই। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে সিউড়ি থানার আইসি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশ বাবু আনসারিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা বাধা দেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে বাবু আনসারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন গ্রামবাসীরা। এমনকি এক যুবক পুলিশের আইসির কলার ধরে টানাটানি করেন। এদিকে, পুলিশকর্মীরা বাবু আনসারিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও, গ্রামবাসীরা তাঁকে টেনে নিয়ে যান।
পরে পুলিশ ও র্যাফ যৌথভাবে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশের প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো যোগ নেই বলে দাবি করেছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তিনি বলেন, “এটি দু’জন ব্যক্তির জমি বিবাদ। এর সঙ্গে তৃণমূল বা বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই। পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল নেতাদের মদতেই বাবু আনসারি এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে আসছেন। এর আগেও তিনি গ্রামে সশস্ত্র তাণ্ডব করেছেন, কিন্তু পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁদের দাবি, বাবুর মাথায় পুলিশের সুরক্ষা রয়েছে। তাই পুলিশ আসার পর তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে যুক্ত থাকা সশস্ত্র দুষ্কৃতীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে অস্ত্র। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা এখনও প্রবল, তাই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এই ঘটনা সিউড়ি অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নতুন করে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।