Trump Tariff: ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় দাবি, ‘১৫০% শুল্কের সতর্কতায় তছনছ হয়ে গেছে BRICS’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Trump Tariff) ব্রিকস নিয়ে বড় দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ব্রিকস গোষ্ঠীতে ১৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকির কারণে গোষ্ঠীটি ভেঙে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ব্রিকস দেশগুলি মার্কিন ডলারকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারা নতুন মুদ্রা চালু করতে চায়, তাই তাদের উপর শুল্ক (Trump Tariff) আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ১৫০% শুল্কের কথা বলার পর থেকে তিনি BRICS নিয়ে কিছু শোনেননি। এই গোষ্ঠী ভেঙে পড়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতও ব্রিকস গোষ্ঠীর অংশ।

শুল্ক নীতির জয়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ডলারকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য BRICS দেশগুলির পরিকল্পনা কখনই সফল হবে না। আমি ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম যে, ব্রিকসে যে দেশই নতুন মুদ্রার কথা বলবে, তার থেকে ১৫০% শুল্ক (Trump Tariff) নেওয়া হবে। তাদের পণ্যের কোনও প্রয়োজন নেই আমাদের। আমি জানি না এখন ব্রিকস-এ কী ঘটছে। অনেকদিন তাঁদের সম্পর্কে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ব্রিকস এখন ভেঙে পড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস শিবিরের নীরবতাকে তাঁর শুল্ক নীতির (Trump Tariff) জয় বলে অভিহিত করেছেন।

BRICS কী?

২০০৬ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চিন BRICS গ্রুপ গঠন করে। দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০ সালে ব্রিকসে যোগ দেয়। এখন মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীও এর অংশ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও, আরও কয়েকটি দেশ এর অংশ হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রিকস দেশগুলি বিশ্বের জনসংখ্যার ৪৫% এবং বিশ্ব অর্থনীতির ২৮% এরও বেশি।

BRICS নিয়ে ট্রাম্পের অসন্তোষের কারণ

২০২২ সালের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের পর ২০২৩ সালের আগস্টে BRICS থেকে এমন খবর বেরিয়ে আসে, যা আমেরিকাকে টেনশেন ফেলে দেয়। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা একটি পৃথক মুদ্রার প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেন, ব্রিকস দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যের জন্য একটি সাধারণ মুদ্রা থাকা উচিত। এর পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ডলারের একনায়কতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার কথাও উঠে আসে। এই সময়ে, ব্রিকস দেশগুলির নতুন মুদ্রার একটি প্রতীকী ছবিও ভাইরাল হয়েছিল, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষুব্ধ করেছিল।

এর প্রভাব কী হবে?

বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য রয়েছে। অধিকাংশ দেশই ইউএস ডলারে অর্থ প্রদান করে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিকস দেশগুলি যদি ডলারের বিকল্প নিয়ে আসে, তাহলে আমেরিকার সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে বাধ্য। অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, ডলারের পাশাপাশি বিশ্বের অন্য একটি মুদ্রাকে রিজার্ভ মুদ্রার মর্যাদা দেওয়া উচিত, যাতে মার্কিন ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করা যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানেন যে ১৫০%  শুল্ক (Trump Tariff) ব্রিকস দেশগুলির বাণিজ্যকে প্রভাবিত করবে, তাই তিনি ভয় তৈরি করে তাদের মুদ্রার দিকে এগিয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে চান।

ভারত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে

ব্রিকস গোষ্ঠীতে রয়েছে ১০টি দেশ-রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। যদি এই সমস্ত দেশ ডলারের পরিবর্তে অন্য মুদ্রায় লেনদেন শুরু করে, তাহলে মার্কিন ডলারের আবস্থা প্রভাবিত হতে বাধ্য, তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিধায় রয়েছেন। তবে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি ডি-ডলারাইজেশনের বিষয়ে ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছিলেন যে দেশটি কখনই এটিকে সমর্থন করেনি এবং ব্রিকস দেশগুলির নিজস্ব মুদ্রা চালু করার কোনও পরিকল্পনা নেই।

মোদী-ট্রাম্প বৈঠক

কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস গোষ্ঠীকে নিশানা করেছিলেন। তারপর তারা ১০০% শুল্ক (Trump Tariff) আরোপের হুমকি দেয়। তিনি বলেছিলেন যে ব্রিকস দেশগুলিকে ভালভাবে বুঝতে হবে যে মার্কিন ডলার প্রতিস্থাপনের প্রচেষ্টা সহ্য করা হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ব্রিকস দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। সূত্রের খবর, মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ব্রিকস দেশগুলির প্রসঙ্গও তুলেছেন ট্রাম্প। যেহেতু ভারত এই গোষ্ঠীর একটি প্রধান মিত্র, তাই ট্রাম্প এই বিষয়ে মার্কিন উদ্বেগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

Exit mobile version