মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ‘গাজা পরিকল্পনা'(Trumps Plan Oppose) মুসলিম দেশগুলোর ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সৌদি আরবের জেদ্দায় এক জরুরি বৈঠকে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং আরব লীগের সদস্যরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে।
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা ও মুসলিম দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি, ট্রাম্প তার পরিকল্পনায় গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বা সবচেয়ে সুন্দর পর্যটনস্থলে রূপান্তরিত করার কথা বলেছিলেন। তবে তার শর্ত ছিল, ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
আরব লীগ ও ওআইসির নেতারা মনে করেন, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার লঙ্ঘন করে এবং এটি ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে। সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে, মুসলিম দেশগুলো গাজার ওপর কোনো জোরপূর্বক পরিকল্পনা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ঘোষণা করেছে।

মিশরের বিকল্প পরিকল্পনা
গাজা নিয়ে মিশর একটি পুনর্নির্মাণ পরিকল্পনা উত্থাপন করেছে, যার বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩ বিলিয়ন ডলার। পরিকল্পনাটি পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে, যাতে গাজার জনগণের জন্য নতুন বাসস্থান, হাসপাতাল, পার্ক এবং বিমানবন্দর নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো, গাজার জনগণকে সেখানেই থাকতে দিতে হবে এবং তাদের দেশান্তরিত করা যাবে না। কায়রোতে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে বেশিরভাগ আরব দেশ এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ প্রভাব
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা মূলত ফিলিস্তিন সমস্যাকে পাশ কাটানোর একটি কৌশল, যা দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ধরে রেখেছে, যা এই পরিকল্পনার মাধ্যমে আরও দৃঢ় হয়েছে।
মুসলিম দেশগুলোর বিরোধিতার কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। গাজা ইস্যুতে আরব বিশ্বের ঐক্য নতুন করে ইসরায়েলের দখলদার নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে পারে।
সমাধান কি?
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। গাজা পুনর্নির্মাণের জন্য মিশরের পরিকল্পনাই বর্তমানে বাস্তবসম্মত বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, এই সংকটের স্থায়ী সমাধান নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাপালন ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্যের ওপর।