সাম্প্রতিক ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, সৌদি আরবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষে( Ukraine War Update) বার্তা দিয়েছেন। এই বৈঠকে, মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনকে যুদ্ধ থামানোর জন্য সম্ভাব্য আলোচনার পথে এগোতে আহ্বান জানিয়েছেন। একই সময়ে, ইউক্রেন ও আমেরিকা পুনরায় একে অপরের সঙ্গে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
এ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “ইউক্রেন গুলি চালানো (Ukraine War Update) বন্ধ করতে প্রস্তুত, এবং এখন রাশিয়ার উপর নির্ভর করছে তারা আলোচনা শুরু করতে চায় কি না।” রুবিও জানান, ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়াকে জানানো হবে এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য রাশিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করা হবে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজও জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল ট্রাম্পের ‘শান্তির দৃষ্টিভঙ্গি’র প্রতি সহমত প্রকাশ করেছে, এবং তারা দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা গ্যারান্টি পেয়েছে।
মস্কোতে ড্রোন হামলা
বৈঠকের আগেই, ১১ মার্চ ইউক্রেন মস্কোর উপর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালায়। এতে একজন নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলাটি ২০২৫ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রথম বড় আকারের আক্রমণ ছিল। মস্কোয়ের তিনটি বিমানবন্দরে প্লেন ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়, এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় যে, ৩৩৭টি ড্রোনের মধ্যে ৯১টি ড্রোন মস্কোর আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সম্পর্ক
এদিকে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছিল। সে সময় ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল এবং এর পর আমেরিকা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তবে সৌদি আরবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর, ইউক্রেন কিছুটা ‘ভদ্র’ হয়ে আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, যা পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করার দিকে ইঙ্গিত দেয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের একটি নতুন রাজনৈতিক কৌশলের লক্ষণ হতে পারে। একদিকে, তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য তারা বিভিন্ন কূটনৈতিক তৎপরতাও চালাচ্ছে। আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসে, যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাবের মাধ্যমে ইউক্রেন বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে চাইছে। একই সময়ে, রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির আলোচনায় আসার পথ তৈরি করতে চায় ইউক্রেন।
এখন প্রশ্ন হল, রাশিয়া এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেবে কি না। যদি তারা সম্মত হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, এবং ইউক্রেনের জন্য এই পদক্ষেপ আরও সমর্থন পেতে সাহায্য করবে।