ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) প্রতিবাদ ও সাসপেনশন রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছিল (Kalyan Banerjee)। এবার দলের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ফের শিরোনামে এলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ (Kalyan Banerjee)। তিনি (Kalyan Banerjee) মন্তব্য করেছেন শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দলে রয়েছেন।
কল্যাণবাবু অভিযোগ করেছেন, দলের কয়েকজন মন্ত্রীর আচরণ ও জীবনযাপন দেখে দলে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে এই মন্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে অস্বস্তি আরও বেড়েছে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, “দিদি আছেন বলে দলে আছি। না হলে কয়েকজন মন্ত্রীর হাবভাব দেখে আর থাকতে ইচ্ছে করে না।” তবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। তিনি আরও বলেন, দলের খারাপ সময়ে এইসব মন্ত্রীদের পাশে পাওয়া যায় না। আরজি কর আন্দোলনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করতে তিনি ও কুণাল ঘোষই প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন। কিন্তু বাকিরা তখন চুপ ছিলেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দিল্লিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্কের জেরে সাসপেনশনের ঘটনা তাঁর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। সেই ক্ষোভ এবার দলের অভ্যন্তরে প্রকাশ পাচ্ছে। অতীতেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নানা সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এবারের মন্তব্যে তিনি দলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কল্যাণবাবুর এই বক্তব্যে তৃণমূলের অন্দরেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে। দলের একাংশ মনে করছে, তাঁর মন্তব্য সরাসরি দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে। দলের নেতাদের মধ্যে কারা তাঁর নিশানায় রয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে দলীয় সতীর্থদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে কল্যাণ বলেছিলেন, “যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন, তাঁরা দল ছেড়ে অন্যভাবে ভোটে দাঁড়ান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বাদ দিয়ে ভোটে দাঁড়ানোর সাহস থাকলে তবেই দেখব।”
তৃণমূল নেতৃত্বের জন্য এটি একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এখন দেখার বিষয়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নতুন করে অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে। এখন নেতৃত্ব কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়, সেদিকেই নজর রাজ্য রাজনীতির।