দেশে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) তৃতীয় পর্যায়ের ১২ টি রাজ্যের ৯৪ টি আসনে ভোট গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে গুজরাটে ২৫টি, কর্ণাটকে ১৪টি, মহারাষ্ট্রে ১১টি, মধ্যপ্রদেশে ৯টি, ছত্তিশগড়ে ৭টি, বিহারে ৫টি, অসমে ৪টি এবং গোয়ায় ২টি আসনে। মধ্যপ্রদেশের ৯টি আসনে ১.৭৭ কোটিরও বেশি ভোটার ১২৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। মধ্যপ্রদেশের যে নয়টি আসনে ভোট গ্রহণ চলছে, সেগুলি হল মোরেনা, ভিন্দ (এসসি) গোয়ালিয়র, গুনা, সাগর, বিদিশা, ভোপাল, রাজগড় এবং বেতুল (এসটি)। মধ্যপ্রদেশের নির্বাচন তিন বড় নেতা দিগ্বিজয় সিং, শিবরাজ সিং চৌহান এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ হবে।
দিগ্বিজয় সিং
মধ্যপ্রদেশের রাজগড় আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দিগ্বিজয় সিং ৩২ বছর পর এই আসনে ফিরেছেন। ৭৭ বছরের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং দুইবারের বিজেপি সাংসদ রডমাল নাগরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজগড় আসনটিকে কংগ্রেসের নিজস্ব গড় মনে করা হত। কারণ ১৯৫২ সাল থেকে কংগ্রেস নয়বার এই আসনে জয়ী হয়েছে। দিগ্বিজয় সিং ১৯৮৪ এবং ১৯৯১ সালে রাজগড় আসনে জয়ী হন, কিন্তু ১৯৮৯ সালে হেরে যান, ১৯৯৩ সালে তিনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। দিগ্বিজয় সিং ১৯৯৪ সালে আসনটি ছেড়ে দিলে দিগ্বিজয় সিং-এর ভাই লক্ষ্মণ সিং, একসময় কংগ্রেস এবং পরে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন হয়ে এই আসনে জয় পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে যখন দিগ্বিজয় সিং ভোপালের আসন থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের সম্মুখীন হন। এবার তিনি পুনরায় নিজের পুরনো আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দিগ্বিজয় সিং। তবে তার জয়ের রাস্তা খুব একটা সহজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
শিবরাজ সিং চৌহান
প্রবীণ বিজেপি নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান মধ্যপ্রদেশের বিদিশা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৭ বছর পর তিনি লোকসভার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবার। যদিও অতীতে বেশ কয়েকবার লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৯১ সালে তিনি বিদিশা লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমবার সাংসদ হন। এরপর ১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯ এবং ২০০৪ সালে ঐ একই আসন থেকে শিবরাজ লোকসভার প্রার্থী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এবার ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে শিবরাজের প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের প্রার্থী প্রতাপ ভানু শর্মা।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
মধ্যপ্রদেশের গুনা আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। গুনা আসনটি গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া রাজ পরিবারের নিজস্ব ঘাটি বলে মনে করা হত। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে জ্যোতিরাদিত্য নিজের পারিবারিক শক্তিকেন্দ্রে বিজেপির কেপি যাদবের কাছে হেরে যান। তখন জ্যোতিরাদিত্য ছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থী। কিন্তু, ২০১৯ সালের পরাজয় তাঁকে এবং তাঁর সমর্থকদের অবাক করে দিয়েছিল কারণ ২০১৪ সালে যখন সারা দেশে নরেন্দ্র মোদীর ঢেউ বয়ে যাচ্ছিল এবং লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতা পরাজিত হয়েছিলেন, তখন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া গুনা আসনে জয়ী হয়েছিলেন। ২০২০ সালে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তাই, ২০০২ সালের পর এই প্রথমবার কংগ্রেস থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে পিতা মাধব রাও সিন্ধিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর প্রথমবার জ্যোতিরাদিত্য গুনা আসনে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়ে উপনির্বাচনে জয়লাভ করেন। এরপর ২০০৪ ও ২০০৯ সালে একই আসন থেকে কংগ্রেসের হয়ে জয় পান। সালে জনপ্রিয় কংগ্রেস বিজেপির টিকিটে তিনি এবার প্রার্থী হয়েছেন। কংগ্রেস এবার (২০২৪) এই আসন থেকে রাও যাদবেন্দ্র সিং যাদবকে প্রার্থী করেছে।