রামনগরে একটি নির্বাচনী (Akhil Giri on Governor) সভা থেকে রাজ্যপালের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করলেন রাজ্যের কারাদপ্তরের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। এমন বক্তব্যের পর
নিজস্ব প্রতিনিধি,পূর্ব মেদিনীপুর: রাষ্ট্রপতি পর, এবার রাজ্যের মন্ত্রী’র নিশানা রাজ্যপাল। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে একটি নির্বাচনী(Akhil Giri on Governor) সভা থেকে রাজ্যপাল সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করলেন রাজ্যের কারাদপ্তরের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে চর্চা। রাজ্যের বিরোধী দল সিপিএম ও বিজেপি মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য নিয়ে তীব্র ভৎসনা করেছে।
জানাগেছে, শুক্রবার বিকেলে রামনগরের কাঁথি লোকসভা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উত্তম বারিকের সমর্থনে কর্মী সভা হয়। সভায় উপস্থিত কাঁথি লোকসভা প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উওম বারিক ও রাজ্যের কারাদপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরি সহ তৃণমূল নেতৃত্বরা। মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় রাজ্যের কারাদপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। সেই বক্তব্য মুহুর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। যেখানে মন্ত্রী অখিল গিরিকে বলতে শোনা যায় ” মাথা খারাপ হয়ে গেছে গরমে, টাক মাথা তো! তার অফিসের কাজকর্ম করে, সেই মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করছে! মেয়েদের দেখতে সুন্দর কাজকর্ম করে তার লোভ লেগে গেছে! বুড়া তোর যদি লোভ লোগে থাকে, তাহলে দক্ষিণ ভারত চলে যা। সেখানে যা। রাজ্যপাল অন্যান্য মেয়েদের হাত ধরে টানে কিনা দেখো? এখানে কেনো এমন করছিস! এসব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেখতে পারছে না? অমিত শাহ-রা দেখতে পাচ্ছে না? রাজ্যপাল মহিলার অবমাননা করেছেন! আগে রাজ্যপালকে সামলান তারপর সন্দেশখালি নিয়ে বলবেন ” ?
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক কয়েক মাস আগে নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি সভা থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মু সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন কারাদপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরি। রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্তব্য’কে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছিল বিরোধী দল বিজেপি। সেইসময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের মন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান। পরবর্তী সময়ে কারাদপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরিও সেই সময় ক্ষমা চান।
এবার মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডা বলেন ” বক্তব্যটা আমি শুনিনি! যদি কোন এরকম বক্তব্য রেখে থাকেন, তাহলে সেটা উনার ব্যক্তিগত বক্তব্য। দল কোনোভাবেই এই বক্তব্যকে মান্যতা দেয় না “!
মন্ত্রী রাজ্যপালের সম্পর্কে কুরুচিকর বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের বিরোধীদল বিজেপি। কাঁথি সংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল ফোনালাপে জানান, ” এটাই তৃণমূল দলের সংস্কৃতি। মন্ত্রী যদি রাজ্যপালের সম্পর্কে প্রকাশ্য জনসভা থেকে এমন মন্তব্য করেন। দল কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের কালচার সম্পর্কে অবগত! এর থেকে বেশি কিছু আর মন্তব্য করব না “!
যদিও এই বক্তব্য নিয়ে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েছে রাজ্যের আর এক বিরোধীদল সিপিএম। সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন ” অখিলবাবু রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন! দলটাকে ধিক্কার জানিয়েছেন। নিজে ক্ষমাপ্রার্থী হয়েছিলেন। রাজ্যপালের চরিত্র নিয়ে মন্তব্য করলেন! যে মামলায় তদন্ত চলছে সেই সম্পর্কে না কিছু না বলাই ভালো। দল নিশ্চিত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তৃণমূল আছে তৃণমূল! তৃণমূল নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে কে কত কুরুচিকর মন্তব্য করে সংবাদ মাধ্যমে শিরোনামে উঠে আসতে পারেন! একজন মন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান রাজ্যপালের সম্পর্কে এমন বক্তব্য করা কোনোমতেই উচিত নয়। তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তাহলে ভেবে নিতে হবে দল থেকে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। মন্ত্রী পদে থাকা অযোগ্য “!