২০২৪-এর আইপিএল ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতিপক্ষ কে হবে তার ফয়সালা হবে আজ। চেন্নাইয়ে হতে চলা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং রাজস্থান রয়্যালস (SRH Vs RR)। একদিকে আইপিএলের সেরা পাওয়ার হিটার জুটি ট্র্যাভিস হেড ও অভিষেক শর্মা এবং অপরদিকে যুজবেন্দ্র চাহাল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বিচক্ষণ স্পিন জুটির মধ্যেও লড়াই হবে। হেড এবং অভিষেকের জুটি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংকে নতুন স্তরে নিয়ে গেছেন এই আইপিএল-এ। তেমনভাবেই স্পিন জাদুতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের নাস্তানাবুদ করছেন চাহাল অশ্বিন জুটি।
চলতি মরশুমে হেড ১৯৯.৬২ স্ট্রাইক রেটে ৫৩৩ রান করেছেন এবং অভিষেক ২০৭.০৪ স্ট্রাইক রেটে ৪৭০ রান করেছেন। এখন পর্যন্ত এই জুটি গড়েছে ৭২টি ছক্কা ও ৯৬টি চার। এছাড়াও, সানরাইজার্সের হেনরিচ ক্লাসেন (১৮০-এর স্ট্রাইক রেটে ৪১৩ রান)-এর মতো দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান রয়েছে, যিনি ৩৪টি ছক্কা মেরেছেন। তবে, উপ্পল বা কোটলা বা ওয়াংখেড়ের তুলনায় চিপকে খেলাটা আলাদা হবে কারণ এখানে বল ব্যাটে এসে পৌঁছতে কিছুটা সময় নেয়, তাই বড় শট খেলা সহজ নয়। রয়্যালসের অফ-স্পিনার অশ্বিন, যিনি তাঁর বেশিরভাগ ক্রিকেট এই মাঠেই খেলেন, তিনি এখানকার পিচ সম্পর্কে ভালভাবেই জানেন এবং টুর্নামেন্টের শেষ পর্যায়ে তাঁর ফর্মের উন্নতিও হয়েছে।
রয়্যালস আশা করবে যে দেশের সেরা লেগ স্পিনার চাহালের সাহায্যে তারা হেড, অভিষেক এবং ক্লাসেনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে। সানরাইজার্সের বোলিংয়ের ক্ষেত্রে, আবারও দায়িত্ব টি নটরাজনের উপর থাকবে, যিনি এই মরশুমে দলের হয়ে সর্বাধিক উইকেট শিকার করেছেন। নিজের চেনা মাঠে পরিস্থিতি কাজে লাগাতে চাইবেন। গত দুই ম্যাচে কোনও উইকেট পাননি ভুবনেশ্বর কুমার। প্যাট কামিন্সকেও স্ট্রাগল করতে দেখা গেছে। এই দুই অভিজ্ঞ পেসার আজ ঘুরে দাঁড়াতে চাইবেন।
সানরাইজার্সের জন্য সমস্যা হল, তাদের দলে দুজন ভালো স্পিনার নেই। বা-হাতি লেগ স্পিনার মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে খুব একটা কার্যকরী নন। অন্যদিকে শাহবাজ আহমেদের প্রধান দক্ষতা ব্যাটিংয়ে। বল হাতে তিনি কোনও ভরসা দিতে পারেন নি। রাজস্থান রয়্যাল এলিমিনেটর ম্যাচে বিরাট ডু প্লেসিসদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে তাদের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। অবশেষে পাঁচ ম্যাচের জয়ের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে। ব্যাটিংয়ে, টপ অর্ডার কিছু ইতিবাচক লক্ষণ দেখিয়েছে, বিশেষ করে যশস্বী জয়সওয়াল, তিনি আগামী মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজের ফর্ম বজায় রাখতে চাইবেন। তবে অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে আরও ভালো করতে হবে কারণ তিনি গত তিন ম্যাচে ২০ রানের গণ্ডিও স্পর্শ করেননি। মিডল অর্ডারে, ধ্রুব জুরেল তার শেষ দুটি ম্যাচে দুই সংখ্যায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় চাপের মধ্যে থাকবেন। দলের ব্যাটিং ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমেয়ার এবং রভম্যান পাওয়েলের উপরও নির্ভরশীল, যারা ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে পাওয়ার হিটিং প্রদর্শন করেছিলেন। রিয়ান পরাগও রয়্যালসের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান।
এসআরএইচ এবং আরআর আইপিএলে ২০ বারের জন্য একে অপরের মুখোমুখি হবে। এখনও পর্যন্ত খেলা ১৯টি ম্যাচের মধ্যে রাজস্থান ৯টি এবং হায়দরাবাদ ১০টি ম্যাচ জিতেছে। আগের ম্যাচে হায়দরাবাদ রাজস্থানকে ১ রানে হারিয়েছিল। এছাড়াও, রাজস্থান ও হায়দরাবাদের মধ্যে শেষ ৬ ম্যাচে উভয়ই ৩-৩ ম্যাচ জিতেছে। সামগ্রিকভাবে, এখন পর্যন্ত দুজনের মধ্যে একটি দুর্দান্ত লড়াই হয়েছে।
আইপিএল-এ রাজস্থান ও হায়দরাবাদের মধ্যে মোট ১৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু চেন্নাইয়ের মাঠে কখনও একে অপরের মুখোমুখি হননি তাঁরা। তবে, উভয় দলই আইপিএলে অন্যান্য দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেছে চেন্নাইয়ে। প্যাট কামিন্সের দল এখানে ১০টি ম্যাচ খেলেছে, মাত্র একটি জিতেছে এবং ৮টি হেরেছে। অন্যদিকে সঞ্জু স্যামসনের দল ৯ ম্যাচে মাত্র ২টি ম্যাচ জিততে পেরেছে এবং ৭টিতে হেরেছে। মজার বিষয় হল, হায়দরাবাদ এখানে প্রথমে ব্যাটিং করে জিতেছিল, অন্যদিকে রাজস্থান তাদের দুটি ম্যাচই তাড়া করে জিতেছিল। এই পরিসংখ্যানগুলি দেখে, আবারও দুজনের মধ্যে একটি কঠিন প্রতিযোগিতা আশা করা হচ্ছে।