লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) ষষ্ঠ দফার প্রচারাভিযান শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। রাজ্যে শেষ ৫টি পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত ২৫টি আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ষষ্ঠ দফায় ভোট হবে তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে। এই পর্যায়ে অনেক বড় নেতার ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে। মোট ৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তমলুক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লড়ছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গাঙ্গুলি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি থেকে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী (দেব) এবং বিজেপির হিরণময় ভট্টাচার্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেদিনীপুরে বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদ জুন মালিয়া। বিষ্ণুপুর থেকে সৌমিত্র খানকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল একই আসন থেকে তৃণমূল টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিষ্ণুপুরের লড়াই অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
ষষ্ঠ পর্যায়ে রাজ্য জুড়ে ১৫,৬০০ টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। নির্বাচন কমিশন ২৬৭৮টি ভোটকেন্দ্রকে অতি সংবেদনশীল বলে ঘোষণা করেছে। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে সর্বাধিক ৫০১টি অতি সংবেদনশীল বুথ রয়েছে। কমিশন ৯ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক, ৫ জন পুলিশ এবং ৮ জন ব্যয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে। ষষ্ঠ দফায় ১,৪৫,৩৪,২২৮ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম পর্ব নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বৈঠক হয়েছে। উপ-নির্বাচন কমিশনার নীতেশ ব্যাস, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব, অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বি ধর এবং অন্যান্য আধিকারিকরা ভার্চুয়ালি যোগ দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক অলোক সিনহা, বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক অনিল কুমার শর্মা, জেলা নির্বাচন পদাধিকারী, রাজ্য পুলিশের নোডাল পদাধিকারী অনন্ত কুমার আর সিআরপিএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল বিকে শর্মা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
তথ্য অনুযায়ী, সপ্তম পর্যায়ে ১৫৮০ সেকশন কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) মোতায়েন করা হবে। এর আগে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১০২০ কোম্পানি মোতায়েন করা হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্ট্রং রুমের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৩ বা ৪ কোম্পানি আসতে পারে। জয়নগর ও বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র অত্যন্ত সংবেদনশীল। রাজারহাট আসনটিও সংবেদনশীল বলে মনে করা হয়। নির্বাচনের জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসি জানিয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে ঝাড়গ্রামে ৬০টি, পুরুলিয়ায় ৬০টি এবং বাঁকুড়ায় ছয়টি বুথ শেড জোনে রয়েছে। অর্থাৎ, এই ভোটকেন্দ্রগুলিতে কোনও ওয়েব কাস্টিং হবে না। এই জায়গাগুলিতে মাইক্রো পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হবে। ভিডিও রেকর্ডিংও করা হবে।
পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে কমিশন বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। গত নির্বাচনে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ভোটের আগে নন্দীগ্রামে এক মহিলাকে হত্যার ঘটনা ভোট পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে ২৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় পুলিশ মোতায়েন করা হবে। নন্দীগ্রামে ২৩২টি কিউআরটি থাকবে।