আবু আলী, ঢাকা: বাংলাদেশের রাজধানীর সদরঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১৯ জন, নারী ৮ জন ও শিশু ৩ জন রয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিআইডব্লিউটিএর।
২৯ জুন সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা, পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা অভিযানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়ে ৩২ জনে। তবে লঞ্চটিতে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলো বলে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন। নিখোঁজদের স্বজনদেরকে বিআইডব্লিউটিএর ০১৭১৬০২৬৭০৪ এর নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, মুন্সিগঞ্জ হতে আগত লঞ্চ মর্নিং বার্ড-এর যে সকল যাত্রী নিখোঁজ তাদের স্বজনদের এই নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর সদস্যরা। সঙ্গে বিপুল সংখ্যাক স্থানীয় মানুষ সহায়তা করছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে উদ্ধার হওয়া যাত্রী মাসুদ মোল্লা টেলিফোনে বলেন, ‘দুই তলা লঞ্চটি অর্ধশাধিক যাত্রী নিয়ে সদরঘাটে আসছিল। হঠাৎ করে অপর একটি লঞ্চের ধাক্কায় এটি ডুবে যাওয়ার সময় আমরা কয়েকজন লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় কাঁচ ভেঙে নদীতে ঝাঁপ দিই। তারপর সাঁতরিয়ে ঢাকার ফরাশগঞ্জে ঘাটে উঠি।
অন্যদিকে লঞ্চডুবির পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আজকের লঞ্চডুবির ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের ঘটনাটি অন্যান্য ঘটনা থেকে একেবারেই আলাদা। আমি সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি এবং দেখার পরে আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। এটা মনে হচ্ছে একটা হত্যাকাণ্ড।’
ঘটনা তদন্তে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘তদন্তের পরে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করবেন।