শিয়ালদহমুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে (Kanchenjunga Express Accident) মালগাড়ির ধাক্কা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছেড়ে রাঙাপানি ও চটেরহাট স্টেশনের মাঝে নিজবাড়িতে দুর্ঘটনা। মালগাড়ির ধাক্কায় বেলাইন পিছনের দুটি কামরা। এখনও পর্যন্ত ৫জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।আতঙ্কে হুড়মুড়িয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন বহু যাত্রী। চলছে উদ্ধারকাজ। বেশ কয়েকজন যাত্রীর জখম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনার জেরে আপাতত ওই লাইনে সম্পূর্ণ বন্ধ ট্রেন চলাচল।
দিনকয়েক ধরে উত্তরবঙ্গে আবহাওয়া একেবারেই ভালো নয়। বর্ষা ঢুকে যাওয়ায় চলছে টানা বৃষ্টি। সোমবার সকালে শিলিগুড়িতে চলছে বৃষ্টি। তা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়েই রওনা দেয় ১৩১৭৪ ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ঘটে বিপত্তি। এদিন সকাল পৌনে নটা নাগাদ রাঙাপানি ও চটেরহাট স্টেশনের মাঝে নিজবাড়িতে একটি মালগাড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে(Kanchenjunga Express Accident) পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মারে। তাতেই বেসামাল হয়ে যায় ট্রেনটি । পিছনের দুটি কামরা প্রায় দুমড়ে মুচড়ে যায়।
যে এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে জনবসতি বেশ কিছুটা দূরে। তবে প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত যাত্রীরা। ট্রেন থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়েন অনেকে। বেশ কয়েকজন জখম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজে পৌঁছেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে যাত্রীদের উদ্ধারকাজ। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিগন্যালিং সিস্টেমের গাফিলতি নাকি দুর্ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। যে লাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, আপাতত সেখান দিয়ে বন্ধ ট্রেন চলাচল। এই দুর্ঘটনার ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ সাময়িক ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
তবে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিইও জয় ভার্মা ৫ জনের মৃত্যু ও ২৫ জনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, পূর্ব রেলওয়ের সিপিআরও কৌশিক মিত্র উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েকে উদ্ধৃত করে বলেছেন যে ২জন লোকো পাইলট এবং একজন গার্ড সহ 8 জন মারা গেছেন।
রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের মতে, পণ্যবাহী ট্রেনের লোকো পাইলট সিগন্যাল ওভারশট করেছিলেন। যার জেরে কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় গার্ড বগি ও জেনারেল বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেনা ও এনডিআরএফের দল উদ্ধার কাজ শেষ করেছে। রেলপথ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
কৌশিক মিত্র জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের শেষের সঙ্গে দুটি পার্সেল এবং একটি এসএলআর কোচ যুক্ত ছিল। এতে কোনো যাত্রী ছিল না। ট্রেনের ৫টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রীই মালদা ও বোলপুরের। সিঙ্গেল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
এই ঘটনায় X হ্যান্ডলে উদ্বেগ প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইট করে জানান,দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় একটি মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার কথা জেনে হতবাক। বিশদ বিবরণের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস একটি পণ্য ট্রেনের সাথে ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গেছে। উদ্ধার, পুনরুদ্ধার, চিকিৎসা সহায়তার জন্য ডিএম, এসপি, চিকিত্সক, অ্যাম্বুলেন্স এবং বিপর্যয় দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতা।
https://x.com/MamataOfficial/status/1802556487371526493?