পুরীর রথ নিয়ে ভিন্ন মুনীর ভিন্ন মত। তবে প্রতিবারই রথযাত্রার ( Rath Yatra 2024) আগে প্রবল ভক্তিভরে পুরীর রথযাত্রা নিয়ে তৈরি হয় আগ্রহ। শুধু তাই নয়, সারা দেশ থেকে ভক্ত সমাগম হয় পুরীতে। রথের দড়ি ছুঁতে পাওয়ার জন্য হয় মারামারিও। কিন্তু এই সবের উর্দ্ধে থাকে ভক্তি এবং মনস্কামনা। গণদেবতা মহাপ্রভু জগন্নাথের রথ টানতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। তাই রথের রশি ছোঁয়া বা স্পর্শ করা একটি প্রচলিত রীতি রয়েছে। পুরীর রথযাত্রা বিশ্ববিখ্যাত।
দড়িকে সর্পের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। জগন্নাথদেবের রথের প্রতিটি অংশই অত্যন্ত পবিত্র। তাই রথ, রথের চাকা ও রশি বা যে কোনও অংশ ছোঁয়ার আকূল চেষ্টা দেখা যায় ভক্তদের মধ্যে। শুধু তাই নয়, ভক্তদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেবের রথের রশি টানা বা ছোঁয়া অত্যন্ত শুভ। রশি ছুঁলেই সব ধরনের পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কথিত আছে তেত্রিশ কোটি ভগবান ওই রথের (Rath Yatra 2024) বিরাজ করেন। সঙ্গে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের অবস্থানও থাকেই। রথের পাশাপাশি রশি ছুঁলেই তেত্রিশ কোটি দেব-দেবীকে স্পর্শ করার সামিল। তাই লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রবল আগ্রহের সঙ্গে রথ টানা ও রশিতে অনন্ত একবার স্পর্শ করতে চেষ্টা করেন। অনেকেরই মতে, পুরাণ অনুযায়ী, জগন্নাথের রথে দড়ি স্পর্শ করলে পুনর্জন্মের কষ্ট ভোগ করতে হয় না। তাই রথ দর্শন করার পরই দড়ি ধরে টান দিতে পারলে পুণ্যলাভ করেন ভক্তরা।
রথের রশি স্পর্শ করার সময় ভক্তিভরে জগন্নাথদেবকে সমার্পন করলেই পূণ্যিলাভ মেলে। শ্রীপ্রভুর আশীর্বাদ পাওয়া যায় এতেই। সবকিছুর উর্ধ্বেই রয়েছে মানুষের ভক্তি। বর্ষিত হয় জগন্নাথের অপার আশীর্বাদ। জগন্নাথ রথযাত্রায় মোট তিনটি রথ থাকে। ভগবান জগন্নাথের রথের নাম ‘নন্দীঘোষ’। এই রথ লাল ও হলুদ রঙের। যেখানে দেবী সুভদ্রা কালো ও লাল রঙের ‘দর্প দালান’ রথে বসে আছেন। লাল-সবুজ রথে ‘তালধ্বজ’-এ বসেন ভাই বলরাম। এই বিশেষ রথ তৈরির জন্য কাঠ বাছাই শুরু হয় বসন্ত পঞ্চমীর দিন ও সমস্ত উপকরণ সংগ্রহের পর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শুরু হয় রথ তৈরির কাজ। প্রসঙ্গত ভগবান জগন্নাথের রথে মোট ১৬টি চাকা থাকে। এই রথটি বলরাম ও বোন সুভদ্রার রথের চেয়ে কিছুটা বড়।
আদি রীতি মেনে, রথগুলি প্রস্তুত হলে, রাজা গজপতি প্রথমে বিশেষ আচার মেনে পুজো করেন। এই সময়, রাজা সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের মণ্ডপ পরিষ্কার করেন। তারপর সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথযাত্রার পথও পরিষ্কার করেন তিনি।