নজির সৃষ্টি করে সকলের মন কেড়েছিলেন। যে হাত একদিন বন্দুক ধরেছিল, সেই হাত এবার শুধুই ধরতে চেয়েছিল কলম। আন্দোলনের পথ ছেড়ে তিনি ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় মন ডোবাতে চেয়েছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম এই ব্যতিক্রমী কারণে কয়েকদিন ধরেই আলোচনায়। কিন্তু তাঁর ইচ্ছে কি ডানা মেলতে পারবে?
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে পিএইচডির অ্যাডমিশন টেস্টে প্রথম হয়েছিলেন অর্ণব। সংশোধনাগার থেকে পুলিশি প্রহরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন তিনি। মেধাতালিকায় তিনিই ছিলেন শীর্ষে। কিন্তু এখন কোনও নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়েই আপাতত ইতিহাসে পিএইচডির ভর্তি পদ্ধতি স্থগিত রাখল বিশ্ববিদ্যালয়। এক বিবৃতি জারি করে জানানো হল, ৯ জুলাই মেধাতালিকার ভিত্তিতে যে কাউন্সেলিং হওয়ার কথা ছিল, তা আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি অবধি অপেক্ষা করতে হবে মেধাতালিকায় নাম থাকা পড়ুয়াদের।
তবে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে নানামহলে উঠছে প্রশ্ন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শিলদাকাণ্ডে যাবজ্জীবন হয় অর্ণব দামের। প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এরপর ১৭ মার্চ হুগলি জেলা সংশোধনাগারে পাঠানো হয় অর্ণবকে। অর্ণবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। অর্ণব খড়গপুর আইআইটির ছাত্র ছিলেন। তবে পড়তে পড়তেই মাওবাদী সংগঠনে নাম লেখান অর্ণব। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মেধাবী ছাত্র তখন কখনও লালগড়ে, কখনও ভিন রাজ্যের জঙ্গলমহলে।
২০১০ সালে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই ঘটনায় অর্ণব ওরফে কিষেণজির স্নেহভাজন বিক্রমের নাম জড়ায়। দোষী সাব্যস্ত হন তিনি, সাজাও পান। সেই অর্ণব জেল থেকেই পিএইচডি করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এরপরই সম্প্রতি ২৫০ জনের সঙ্গে তিনিও পিএইচডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন। গত সপ্তাহেই রেজাল্ট বেরোয়, তালিকায় প্রথমেই অর্ণব দামের নাম। এদিন ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তাঁরও।