অবশেষে কাটছে জট। সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে(university )পিএইচডিতে ভর্তি হতে পারেন জেলবন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম( maosit arnab dam)। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সোমবার বিকেল ৩টের সময় সেখানে পিএইচডির জন্য অর্ণবের কাউন্সেলিং হবে। তার পরেই তিনি গবেষণা করতে পারবেন। মনে করা হচ্ছে, তার মধ্যে কারা দফতর থেকে পাঠানো চিঠির জবাবও এসে যাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে।
হুগলি সংশোধানাগারে বন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ইতিহাসে পিএইচডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেন। গত জুন মাসের ২৬ তারিখে কড়া পুলিশ প্রহরায় ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও আসেন। জানা গিয়েছে, ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রায় ৭৬.৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে ২৫০ জনের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন অর্ণব। মেধা তালিকা প্রকাশ করার পরে ৯ জুলাই ভর্তির তারিখ দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ টি বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র ইতিহাস বিভাগে ভর্তি স্থগিত রেখে বাকি বিষয়গুলির ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে, যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অর্ণব দামকে ভর্তি নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মত বিরোধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের মধ্যে আতঙ্ক ছিল, যেহেতু অর্ণব মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত ছিল তাই ফের যদি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিছু ঘটায়, তার দায় কে নেবে ! সূত্রের খবর, হুগলি জেলা সংশোধানাগার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি চিঠিও পাঠানো হয়। সেখানে এক জেলবন্দি পিএইডডি করতে চাইছে বলে উল্লেখ করা হয়। সেই মতো তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয়।
<span;>খড়্গপুর আইআইটির মেধাবী ছাত্র অর্ণব পড়াশোনা ছেড়ে সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট সেই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গত ফেব্রুয়ারিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই হুগলি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি। তিনি জেলে বসেই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা সেট-এ উত্তীর্ণ হন। তার পরে জেল থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে গিয়ে পিএইচডির প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তার পরেও গবেষণার কাজ শুরু করতে পারেননি তিনি। সেই নিয়েই শুরু হয় টানাপড়েন। তৃণমূল নেতা কুণালের অভিযোগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই বাধা দিচ্ছেন। ঘটনাটি নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ভূমিকায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও ‘ক্ষুব্ধ’ বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়। কুণাল জানান, ওই দুই মন্ত্রী আলোচনা করেছেন। সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। গবেষণায় যাতে সুবিধা হয়, সে কারণে অর্ণবকে হুগলি থেকে বর্ধমান জেলে সরানো হবে। কারামন্ত্রীও তাতে সায় দিয়েছেন। তার পর সোমবার শুরু হচ্ছে ভর্তির প্রক্রিয়া।