দীপা মালিক একজন বিশিষ্ট ভারতীয় প্যারালিম্পিয়ান (Paralympic Hero) এবং ক্রীড়াবিদ যিনি তাঁর অপরিসীম দক্ষতা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্রীড়া জগতে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করেছেন। তাঁর জীবন অনুপ্রেরণা এবং অধ্যবসায়ের একটি উদাহরণ।
দীপা মালিক ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জীবনের একটি সন্ধিক্ষণ আসে যখন তিনি ১৯৯৯ সালে মেরুদণ্ডের টিউমারে আক্রান্ত হন, যা তাঁর শরীরের নিচের অংশে সম্পূর্ণ অসাড়তা সৃষ্টি করে এবং তাঁকে হুইলচেয়ারের উপর নির্ভর করতে বাধ্য করে। একই সময়ে, তাঁর স্বামী কর্নেল বিক্রম সিং কার্গিলে দেশের হয়ে লড়াই করছিলেন। সেই সময়ে, দীপা মেরুদণ্ডের টিউমারের জন্য অস্ত্রোপচার করেছিলেন এবং ১৮৩ টি সেলাই লেগেছিল তার শরীরে। তবে, এই কঠিন পরিস্থিতি তাঁকে নিরুৎসাহিত করেনি, বরং তিনি এটিকে খেলাধুলায় তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের অনুপ্রেরণা হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।
দীপা মালিক (Paralympic Hero) রিও ২০১৬ প্যারালিম্পিক গেমসে মহিলাদের শটপুট ইভেন্টে রৌপ্য পদক জিতে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন। প্যারালিম্পিকে পদকজয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা তিনিই।
দীপা ২০১১ সালে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক এবং একই বছর শারজায় বিশ্ব গেমসে দুটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। ২০১২ সালে, তিনি মালয়েশিয়া ওপেন অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিন এবং ডিসকাস থ্রোতে দুটি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।
তিনি বেইজিংয়ে ২০১৪ সালের চায়না ওপেন অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে শটপুটে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। একই বছর, তিনি ইনচিয়ন এশিয়ান প্যারা গেমসে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।
২০১৬ সালটি দীপা মালিকের জন্যও ভালো ছিল এবং প্যারালিম্পিকে রৌপ্য পদক জয়ের আগে তিনি দুবাইতে অনুষ্ঠিত ওশেনিয়া এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিন থ্রোতে সোনা এবং শটপুটে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন।
দীপা (Paralympic Hero) কেবল খেলাধুলাতেই এগিয়ে নেই, তিনি সামাজিক কাজের পাশাপাশি লেখালেখিও করেন। তিনি গুরুতর রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। শটপুটার ছাড়াও দীপা একজন সাঁতারু, বাইকার, জ্যাভলিন এবং ডিস্কাস থ্রোয়ার। তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সমাজে অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন। তাঁর জীবনযাত্রা এবং সাফল্য দেখায় যে কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখা এবং স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। দীপা মালিকের সংগ্রাম, কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা তাঁর অনুপ্রেরণামূলক জীবনের গল্পকে উন্মোচিত করে।