রাত পোহালেই নবান্ন অভিযান। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ ও আসল দোষীদের গ্রেফতারির ডাক দিয়ে নবান্ন অভিযান। বিরোধীদের দাবি, এটা সম্পূর্ণ ‘অরাজনৈতিক কর্মসূচি’, কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্ত করেই এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। আর তাতে চরম অশান্তি আশঙ্কা করছে তৃণমূল। পুলিশের পোশাক পরে গুলি চালানোও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি এই কর্মসূচি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন।
কুণাল বলেন, “নবান্ন অভিযান বেআইনি, অবৈধ। কারোর কোনও দায়িত্বশীল সংগঠন পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে কর্মসূচি করছে না। সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে লোক ক্ষেপিয়ে গন্ডগোলের চেষ্টা হচ্ছে। তদন্তে সিবিআই, মামলা সুপ্রিম কোর্টে দিল্লিতে, আর কলকাতায় নবান্ন চলো বলে গদির রাজনীতি করা হচ্ছে। যাঁরা বাংলায় নির্বাচনের মানুষের দ্বারা প্রত্যাখিত হয়েছে, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা অন্য কোনও শক্তিকে জড়িত করার চেষ্টা করছে।” তাঁর অভিযোগ, “একটা চক্র কাজ করছে। তার মধ্যে বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএস প্রমোট করছে। সিপিএম মনোভাবাপন্ন কিছু গোষ্ঠী মধ্যে রয়েছে। বঙ্গবিরোধী কিছু গোষ্ঠী-অপশক্তি, যাঁরা এলোমেলো করে দিতে চাইছে বাংলাকে। আমাদের আশঙ্কা, আমরা বারবার পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টা বলেছি।”
যদিও এই কর্মসূচি নিয়ে আগেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুভেন্দুর কথায়, “ছাত্রসমাজ অভিযান ডেকেছে। আমি বলেছি, যদি হয়, নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম পাই, নাগরিক হিসেবে…ওরা তো প্রত্যেক বাড়ি থেকে একজনকে চেয়েছে। আমারও অধিকার আছে আমার বাড়ি থেকে যাওয়ার।” আর অন্যদিকে, নবান্ন অভিযান নিয়ে সুকান্তর বক্তব্য, “আমার মনে হয়, অরাজনৈতিক ভাবেই অভিযান হওয়া উচিত। রাজনৈতিক নেতারা দূরে থাকলেই ভাল।” যদিও বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, “বিরোধী দলনেতা কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছেন। কর্মসূচির উদ্যোক্তারা আমার নাম ব্যবহার করে প্রচার করেছেন। এটা চরম অনৈতিক কাজ। ধিক্কার জানাচ্ছি। এটা বিরাট লড়াইকে ভাঙার জন্য বিভ্রান্তি তৈরির অপচেষ্টা।”
কুণাল যে অশান্তির আশঙ্কা করছেন, তার প্রেক্ষিতে বেশ কিছু ভিডিয়ো তাঁদের হাতে এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ” বাংলার বাইরে থেকে গ্রুপ করে করে কিছু লোক নাশকতার জন্য ঢোকানো হতে পারে। পুলিশের পোশাক পরে নিজেরা গুলি চালনা, বা অন্য কিছু করা, যাতে মানুষের মধ্যে সরকার কিংবা পুলিশ সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। গন্ডগোলের পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা।” তিনি বলেন, “ভিডিয়োগুলো আমাদের হাতে এসেছে। আইনত যেখানে যেখানে দেওয়ার, আমরা দেব।”
বিরোধীদের কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, “ওরা বডি চাইছে, শুকুনের রাজনীতি করছে। ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিল হয়, সেটা একটা ব্যাপার। আমরাও তো বলছি উই ওয়ান্ট জাস্টিস। পুলিশ তো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীকে ধরেছে, সিবিআই কী করছে? বাংলায় ন্যায় বিচারের দাবিতে যতগুলো মিছিল বেরোবে, সে বাংলার যে প্রান্ত থেকেই বেরোক না কেন, শেয হবে সিজিও কমপ্লেক্সে, কারণ তদন্ত করছে সিবিআই।”