তরুণী চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘আমরা জানতে পারছি, আরজি কর হাসপাতালে(Rg kar medical college) পুলিশের যে আউটপোস্ট আছে, সেখানে সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে আমার মেয়ের এরকম পরিণতির খবর যায়। তারপরও কিন্তু ওরা আমার মেয়ের কোনও শারীরিক পরীক্ষা করেনি। যেটা তাদের প্রথম কাজ ছিল, সেটা তারা করেনি
তিনি বলেন, ‘সকাল ১১ টায় আমাদের জানানো হয় যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারা কোনও মেডিক্যাল টেস্ট করল না। তারা আগেই বলে দিল যে আত্মহত্যা করেছে। আমাদের মেয়েকে দেখতে আমরা বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে এসেছিলাম। তিনি তৃতীয় যে প্রশ্ন করেন, সেটা হল, ‘মেয়ের মুখ দেখতে দেওয়ার জন্য আমাদের ওই সেমিনার হলের বাইরে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল এবং মেয়ের মা পুলিশের হাতে-পায়ে ধরতে শুরু করেছিল। ভিতরে তখন লোকজন ঘোরাঘুরি করছিল। আমাদের কিন্তু ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এটা কী কারণে? এই প্রশ্নটার উত্তর চাই আমার। রুণী চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) করতে এত দেরি কেন করল হাসপাতাল? পোস্টমর্টেম তো বিকেল পাঁচটার মধ্যে করা উচিত ছিল। কিন্তু দেখা গেল যে সন্ধ্যা ছ’টার আগে পোস্টমর্টেম হল না। সন্ধ্যা ছ’টা থেকে শুরু হল।’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তরুণী চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘বেলা ১২ টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল চত্বরে ছিলাম আমরা। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ – কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। একটা কথাও বলেনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেহটা রেখে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের উপরে এত প্রেশার তৈরি করা হয়েছিল….। আমরা টালা থানায় গিয়েছিলাম। টালা থানায় আমরা এক ঘণ্টা বসেছিলাম। ৩০০-৪০০ পুলিশকর্মী আমাদের ঘিরে রেখে সেখানে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে বাধ্য হয়ে আমরা বাড়িতে ফিরে যাই।’
শ্মশানে সৎকারের জন্য খরচের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানেও একটা প্রশ্ন। আমার মেয়ে সেদিন মারা গিয়েছে। আমার মেয়ের শ্মশানের খরচটা ফ্রি করে দিয়েছে। কারা? আমরা জানতে পারিনি আজ পর্যন্ত। কেন করা হয়েছে? আমার মেয়ের আত্মা খুব কষ্ট পেয়েছে। যাওয়ার সময় ভেবেছে যে আমার বাপি এইটুকু টাকা খরচ করতে পারল না। আমার কাছে কী মর্মান্তিক ছিল সেই দিনটা। এই প্রশ্নের উত্তরটা আমায় কে দেবে?’
পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করে তরুণী চিকিৎসকের বাবা প্রশ্ন করেন যে কেন তাঁকে টাকা দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘যখন আমার মেয়ের দেহ আমার ঘরে শায়িত ছিল, তখন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (নর্থ) আমাদের ঘরের একটা গলিতে ঢুকে ঘরের ভিতরে তিনি আমায় টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার যে জবাব দেওয়ার, সেটা আমরা সঙ্গে-সঙ্গে দিয়ে দিয়েছিলাম।’