আরজি কর কাণ্ডে সিজার তালিকা এবং পোস্টমর্টেমের রিপোর্টে(postmortem )অসামঞ্জস্য নির্যাতিতার পোশাক নিয়ে। যেখানে সিজার লিস্টে দেখা যাচ্ছে, নির্যাতিতার নিম্নাঙ্গের পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, নির্যাতিতার নিম্নাঙ্গের পোশাক মেলেনি। দুই সরকারি নথিতে দু’রকম বয়না তাই ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। সিজর লিস্টে যেখানে বলছে, জিনস এবং অন্তর্বাস মিলেছে, সেখানে পোস্টমর্টেমে সেই সব কিছুই পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেসে যেখানে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, সেখানে নিম্নাঙ্গের পোশাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফরেন্সিক তথ্য সংগ্রহের জন্য। তবে ময়নাতদন্তকারীদের হাতে নির্যাতিতার নিম্নাঙ্গের সেই পোশাক পৌঁছলই না। কেন এমনটা হল? তা নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন। এদিকে ময়নাতদন্তে রিপোর্টে সরাসরি ধর্ষণের কথা উল্লেখ করা নেই। অনুমান কা হচ্ছে, নিম্নাঙ্গের পোশাকে যে সেমিনাল ফ্লুইড পাওয়ার কথা, সেটা না পেয়েই হয়ত র্ষণের কথা সরাসরি বলা হয়নি পোস্টমর্টেম রিপোর্টে।
এর আগে মৃতদেহের চালান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টে। মৃতদেহের সঙ্গে ময়নাতদন্তে আরও কি কি সামগ্রী পাঠানো হয়েছে, তা সেই চালানে উল্লেখ থাকা উচিত। এই আবহে তথ্যপ্রমাণ হিসেবে সেই নথি অত্যন্ত গরুত্বপূর্ণ। তবে রাজ্য সরকারের আইনজীবী বা সিবিআই, কেউই সেই চালানের কাগজ আদালতে দেখাতে পারেননি। উল্লেখ্য, সোমবার মুখবন্ধ খামে একটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। এরপর রাজ্য এবং অন্যান্য পক্ষের সওয়াল জবাবের সময়ই আরজি করে নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ওঠে।
গত সোমবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি জানতে চান দেহ যখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সেই চালান কোথায়? সেই প্রশ্নের মুখে রাজ্যের তরফের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রথমে দাবি করেন, কেস ডায়েরির সঙ্গেই চালানটি সিবিআইকে দিয়ে দেওয়ার কথা। তবে সিবিআই-এর তরফ থেকে সলিসিটর জেনারেল দাবি করেন, সেই চালান তাদের কাছে নেই। এরপরই কপিল সিব্বল চালানের খোঁজে সহকারী আইনদীবীদের সাহায্য চান। তবে সেই চালান আর মেলেনি।
জনস্বার্থ মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করা আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সেদিন সুপ্রিম কোর্টে বলেন, ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা অনুযায়ী, প্রথমে এফআইআর করে ঘটনাস্থলে ফরেনসিক যেতে পারবে পুলিশের সঙ্গে। কিন্তু এখানে রাত পৌনে ১২টায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। গত ২৭ বছরের কর্মজীবনে আমি এমন মামলা দেখিনি।’ আদালতে আরও বলা হয়, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উপস্থিত চিকিৎসকেরা উত্তরবঙ্গের লবির’।