নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: দেশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঠাঁই পেতে যে কত কঠিন তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বিজেপির নেতারা ।দল এখনও ক্ষমতায় আসতে পারল না তার আগেই একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত গোষ্ঠীকোন্দল পৌঁছেছে চরমে। আসলে ক্ষমতার লোভে কে না এগিয়ে থাকতে চান।
তারই ফলস্বরূপ মুকুল রায়কে নিয়ে বিতর্কের শেষ হতে না হতেই আর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এল। রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ থেকে নাকি সরতে চলেছেন খড়গপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এমনই খবর মিলেছে সূত্র মারফত।
সূত্রের খবর,পশ্চিমবঙ্গে দল পরিচালনায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে দিলীপ ঘোষ নিজের ঘনিষ্ঠদেরই শুধুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে সমালোচনা হয় দিল্লির এক বৈঠকে। সেখানে বিজেপির রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কাজে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অখুশি হওয়ায় তাঁকে নিজের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছে বিজেপির দিল্লির নেতারা। সেই সদস্যের সঙ্গে আবার দিলীপ ঘোষের বেশ ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেই নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে সভাপতির পদ ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়ে দেন দিলীপ ঘোষ।
তবে,ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং-এর কাছে দিলীপ ঘোষের ব্যাপারে ফোন মারফত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট মজবুত।এখন সংগঠনের জন্য ভাববার অবকাশ নেই এখন। এখানে কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না। আমাদের এখন একটাই টার্গেট কত তাড়াতাড়ি বাংলা থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করব। বাংলার মানুষ আমাদের বিজেপির ওপর ভরসা করতে শুরু করেছে। জায়গায় জায়গায় এখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করছে। মানুষই পারে এর যোগ্য উত্তর দিতে।তাই বাংলার মানুষ আগামী বিধানসভার ভোটে তৃণমূলকে উৎখাত করে বিজেপি সরকার গড়তে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে।”
প্রসঙ্গত,২০১৫ সালে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে আসীন হন দিলীপ ঘোষ। তারপর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় বিজেপির। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খড়গপুর সদর কেন্দ্রে ঐতিহাসিক জয় হাসিল করেন দিলীপবাবু। এরপরে মুকুল রায় এবং পরে অর্জুন সিং বিজেপিতে যোগদান করায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসনে জয়লাভ করেন বিজেপির প্রার্থীরা। যা বঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে রেকর্ড।
অন্যদিকে, সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে রাজ্য বিজেপির কোনও নেতাই এখনও মুখ খোলেননি। বিজেপির এক রাজ্য সম্পাদক ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন যে চলতি সপ্তাহে বড় সাংগঠনিক রদবদল হবে। দিলীপ ঘোষের ইস্তফার বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি স্পষ্টতই জানিয়েছেন, ‘যা হবে সবাই জানতে পারবে। এখন কিছুই বলা যাবে না।’
তবে,কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় দিলীপবাবু কোন অবস্থান নেবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।