পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে মা মহামায়ার অন্যরূপ হলো কালী (Kali Puja)। কালী পূজার (Kali Puja) কালী শব্দটি কাল শব্দের স্ত্রীর রূপ, যার অর্থ হল কৃষ্ণ বর্ণ বা গুরু বর্ণ। কালীর (Kali Puja) একাধিক রূপের বর্ণণা পাওয়া যায়। বাংলাতেও একাধিক রূপে মা কালীকে পুজো (Kali Puja) করা হয়। যেমন দক্ষিণা কালী, শ্মশান কালী, ভদ্রকালী, রক্ষাকালী ,গ্রহ কালী, চামুণ্ডা, ছিন্নমস্তা প্রভৃতি। মহাকাল সংহিতা অনুসারে মা কালীর আবার নব রূপের পরিচয় পাওয়া যায়। বাংলায় মা কালীর বিশেষভাবে পুজো করা হয়।
বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থে কালী পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন গ্রন্থ অনুযায়ী কালী হচ্ছে একটি দানবীয় রূপ। মহাভারতেও মা কালীর উল্লেখ রয়েছে। সেখানে যোদ্ধা এবং পশুদের আত্মা বহন করেন যিনি, তাঁকে কাল রাত্রি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনিই কালী। নবদ্বীপে কৃষ্ণানন্দ নামের এক তান্ত্রিক সবার প্রথম মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করেন। তবে তার আগে থেকেই বাংলায় মা কালীর পুজো হতো। তাম্র পটে বা খোদাই করে কালীর মূর্তি এঁকে মা কালীর পুজো হতো বা মা কালীর সাধনা করা হতো। অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কালী পূজাকে জনপ্রিয় করে তোলেন এবং এইভাবে মা কালীর প্রতিমা পূজার প্রচলন শুরু। তারপরেই বাংলার সমাজে সাধারণ মানুষের মনে কালী পুজো একটি বিশেষ স্থান পায়। উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার বিভিন্ন ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপুজোর ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়। বর্তমানে মন্দিরে বা বাড়িতে কালীপুজোর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবের তরফেও চাঁদা তুলে কালী পুজো করা হয়। তবে একেবারে শুরুর দিকে তন্ত্র সাধনার জন্য কালী পুজো হতো। পাশাপাশি বাংলার ডাকাতরা কালী পুজো করে কাজে বের হতো। শোনা যায়, বাংলার ডাকাতরা কালী পুজোর সময় নর বলি দিতো। প্রচলিত বিশ্বাস আছে, মা কালীর নাম নিয়ে কোনও কাছে গেলে, সমস্ত বাধা দূর হয়ে যায়।