নিজস্ব প্রতিনিধি, বিষ্ণুপুরঃ সাতসকালে গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর। আত্মঘাতী বিষ্ণুপুরের মল্লরাজ বংশের অন্যতম বর্ষীয়ান সদস্য সলিল সিংহ ঠাকুর (৬২)। শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ নিজের বাসভবনের বসার ঘরে বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, গুলি গলায় লেগে মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় সাবেক রাজঘরানার অন্যতম প্রবীণ সদস্যের। মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান স্থানীয়দের।
যদিও এখন আর সেই রাজত্ব নেই। নেই সেই জাঁকজমকও। এখন আর শোনাও যায় না রাজবাড়ির সেই গুলির আওয়াজ। ফলে এদিনের সকালে রাজবাড়ি থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসলেও প্রথম দিকে বিষয়টিকে কেউ তেমন একটা গুরুত্ব না দিলেও পরে সলিল সিংহ ঠাকুরের আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজবাড়িতে এসে ভিড় জমাতে থাকেন এলাকার মানুষ৷
এদিকে শনিবার সকালের আচমকা গুলির আওয়াজ প্রথমে শুনে অবাক হয়ে যান বাড়ির পরিচারিকা। তিনি দৌড়ে ঘরে ঢোকেন।আর দেখেন সলিলবাবুর রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। আর দেহের পাশেই রয়েছে একটি একনলা বন্দুক৷ওই পরিচারিকাই চিৎকার করে সুনীলবাবুর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর দেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। সলিলবাবুর নিথর দেহ দেখে হতবাক বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা। হইচই পড়ে যায় জেলাজুড়ে।খবর দেওয়া হয় বিষ্ণুপুর থানায়৷
ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। পাশাপাশি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত পারিবারিক বন্দুক থেকেই গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন রাজপরিবারের সদস্য। প্রতিবেশীদের দাবি, নানা শারীরিক অসুস্থতা ছিল তাঁর। সে কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাই আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেন সলিলবাবু। এদিকে, এই ঘটনার জেরে গোটা মল্লভূমি জুড়ের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঠিক কী কারণে তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা খতিয়ে দেখছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা।