খবরএইসময়,শ্যামনগরঃ করনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সমগ্র বিশ্ব। তবে প্রত্যক্ষ করোনা যোদ্ধা হচ্ছেন চিকিৎসকেরা। আর সেই লড়াইতে সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ খোয়াতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সমগ্র বিশ্ব জুড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু চিকিৎসক।
গত পাঁচ মাসে ২০০ জনের বেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রাণ গিয়েছে শতাধিক নার্স এবং চিকিৎসা কর্মীদের। ভারতের মাটিতেও সেই সংখ্যাটা নেহাত কিছু কম নয়। বিহারে ১৮ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৩০ জন চিকিৎসকের প্রাণ গিয়েছে করোনার কারণে। বাংলার মাটিতে সেই সংখ্যাটা ২০।
এরই মাঝে চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে একই দিনে বাংলার চার চিকিৎসকের করোনায় আক্রান্ত হয় মৃত্যু। সোমবার কলকাতার তিন বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে চার চিকিৎসকের। যারা সকলের করোনা ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন। এরা হলেন তপন সিনহা, প্রদীপ ভট্টাচার্য, হিমাদ্রি সেনগুপ্ত এবং বিশ্বজিৎ মণ্ডল। কেউ ছিলেন হৃদ রোগের চিকিৎসক, কেউ চক্ষু চিকিৎসক এবং কেউ ছিলেন জেনারেল ফিজিসিয়ান।
এদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার শ্যামনগররে বাসিন্দা জেনারেল ফিজিসিয়ান ডাঃ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না শ্যামনগর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার যা নিয়ে আলোচনা চলেছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। সকলেই শোকস্তব্ধ। অনেকেই প্রোফাইল ছবি কালো করে দিয়েছেন। সকলেরই এক বক্তব্য, “বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল সাধারণ মানুষের।”
একই দশা হয়েছে চিকিৎসক তপন সিনহা-র মৃত্যু ঘিরেও। চিকিৎসক মহলে বিশেষ জনপ্রিয় ছিলেন তপনবাবু। তাঁর অকাল প্রয়াণে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে চিকিৎসক মহলে। তপনবাবুর প্রয়াণে এক চিকিৎসক বলেছেন, “পদবীর মর্যাদা ছিল তাঁর হৃদয়ে। সিংহ হৃদয়। টাকা পয়সা ছিল। প্রায় মাসেই সুন্দরবনে ছুটে যেতো ওষুধ, খাবার, জামাকাপড় নিয়ে। পুরো নিজের খরচে।”
একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “গত তিনমাস কোঠারি হাসপাতালে আইসিইউ, এইচডিইউ-তে কোভিডের সঙ্গে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে নেমেছিল। টাকার জন্য নয়। পারিবারিক সূত্রে টাকা তাপনদার প্রচুর আছে। কোনোদিন রোগীর রক্ত চুষতে ও দেখিনি। বরং গরিবের পকেটে টাকা গুঁজে দিত ওষুধের জন্য।”