খানাকুলে পতাকা উত্তোলনের সময় তৃণমূল–বিজেপি সঙ্ঘর্ষ, খুন বিজেপি’র বুথকর্মী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগঃ দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবস। আর এই স্বাধীনতা দিবসের দিনই রাজনৈতিক সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটল বাংলায়।হুগলী জেলার খানাকুলে খুন হলেন সুদর্শন প্রামাণিক নামে বছর চল্লিশের এক বিজেপি কর্মী।ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনই পিটিয়ে মেরেছে তাঁদের কর্মীকে। অন্যদিকে দিকে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

জানা গিয়েছে, খানাকুলের দৌলতচক ব্লকের নবতিপুর এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি পালন করছিল বিজেপির। কাছাকাছি জায়গায় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি ছিল তৃণমূলেরও। সেই সময়েই দুই দলের কর্মীদের মধ্যে বচসা বাঁধলে সুদর্শনের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ।অভিযোগের তীর শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।  ওদিকে মাথায় আচমকা ধারালো অস্ত্রের কোপে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সুদর্শন। সাথেসাথে আহত সুদাম ওরফে সুদর্শনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আহত বিজেপিকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এরপর ওই বিজেপি নেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকা জুড়ে।বিজেপি নেতার মৃত দেহ নিয়ে রাস্তায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। খবর পেয়ে ছুটে আসেন বিজেপির রাজ্য নেতা তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সহ বেশ কিছু বিজেপির রাজ্য ও স্থানিয় নেতৃত্ব।

বিজেপির বক্তব্য, আরামবাগ মহকুমায় তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই ভয় পেয়ে এখন খুনোখুনিতে নেমেছে তৃণমূল।বিজেপি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের পুলিশ যদি গ্রেফতার না করে তাহলে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।বিজেপি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের পুলিশ যদি গ্রেফতার না করে তাহলে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “এই খুনের ঘটনা একেবারেই বিজেপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল কংগ্রেস খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।” তিনি আরও বলেন, “পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে। শিগগিরই সত্য উদ্ঘাটন হবে।”

স্থানীয় ওয়াকিবহাল মানুষের মতে,আরামবাগ, খানাকুল, গোঘাট, পুরশুড়ার মত গ্রামীণ হুগলির এই সমস্ত এলাকা চিরকালই রাজনৈতিক ভাবে উত্তেজনা প্রবণ। একই সঙ্গে এই সমস্ত এলাকায় রাজনৈতিক সংঘাত, হত্যা এসব বহু পুরনো রেওয়াজ। বাম জমানাতেও এই সমস্ত এলাকা ছিল সিপিএমের একছত্র আধিপত্য।  লাল পতাকা ছাড়া অন্য ঝাণ্ডা লাগানোর অনুমতিই ছিল না। অনেকের মতে, তৃণমূল আসার পর ঝাণ্ডার রঙ বদলেছে। বাকি সব একই রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি–র টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এ ঘটনার নিন্দা করে টুইটও করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে খানাকুল থানার পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে‌।