বহু বছর ধরে এপার বাংলার জমি দখল করে নিয়েছিল বাংলাদেশ (BSF)। বিএসএফের (BSF) তৎপরতায় সেই জমি ভারতের দখলে এল বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশি দুষ্কৃতিরা ৯ বছর ধরে দখল করে রেখেছিল চাষের জমি বলে অভিযোগ উঠেছে (BSF)। এবার নিজের হারিয়ে যাওয়া জমিতে চাষ করতে পারবেন বলে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন জলপাইগুড়ির কৃষক আনন্দ সরকার (BSF)।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় থাকা নগর বেরুবারি গ্রামে থাকেন তিনি। প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে তিনি চাষ করতেন। কিন্তু ২০১৫ সালে সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু হয়। সেই সময় তিনি বসতি অন্যত্র সরিয়ে নেন। কিন্তু কিছুদিন পরে এসে দেখেন তাঁর জমিতে অন্য কেউ চাষ করছে। খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর জমিতে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার প্রধান পাড়া এলাকার এক বাসিন্দা চাষ করছেন। বিষয়টি ওই কৃষক ও এলাকার বাসিন্দারা সেই সময়ে দায়িত্বে থাকা বিএসএফের আধিকারিকদের জানান। সেই সময় কোনও কাজ হয়নি বলেই আনন্দ সরকার জানিয়েছেন।
চলতি বছরে ফের বিষয়টি তারা BSF এর ৯৩ নং ব্যাটেলিয়নের কমান্ডারের কাছে অভিযোগ আকারে জানান আনন্দ সরকার। অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষয়টি বিএসএফের আধিকারিকরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তারপরেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রাউন্ড রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ আসে। সেই সময় বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তাল। তারমধ্যেই বিএসএফের আধিকারিকরা তদন্ত করেন। সেই তদন্তের রিপোর্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি ওই জমিটিতে ভারত – বাংলাদেশের আধিকারিকেরা যৌথ সমীক্ষা করে। গায়ের জোরে দখল রাখা সাড়ে তিন বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়।
আনন্দ সরকারের স্ত্রী অনুমালা সরকার বলেন, “কাঁটাতারের বেড়া হওয়ার পর আমরা অন্যত্র চলে আসি। কাজকর্ম করে কোনরকম ভাবে সংসার চালাচ্ছিলাম। সংসারের হাল ফেরাতে স্বামী ভিন রাজ্যে চলে যায় কাজ করতে। এরপর ২০১৯ সালে স্বামীর দুটো কিডনি বিকল হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার। জমি বিক্রি করে টাকার জোগাড় করব ভেবেছিলাম। কিন্তু, গিয়ে দেখতে পাই আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশিরা।” একই সুর আনন্দবাবুর গলাতেও। বলেন, “জমি দখল হয়ে গিয়েছে জানবার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। আমি বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করি। অভিযোগ জানাই। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। চোখের সামনে গত ৯ বছর ধরে দেখে যাচ্ছিলাম আমার জমি বাংলাদেশিদের হাতে দখল হয়ে আছে। এরপর আমি চলতি বছর BSF আধিকারিকের নজরে আনি। তাঁরা উদ্যোগ নিলে জমি জরিপ হয়। জানতে পারি আমার জমি উদ্ধার হয়েছে।” খুশি বিএসএফ-ও। বিএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট মনোজ কুমার বলেন, “সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সম্পত্তি রক্ষা করা বিএসএফের কর্তব্য। আমরা সেই কাজ করেছি।”