আগামী ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সাগরদ্বীপে বসছে গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) আসর। তীর্থযাত্রীদের (Gangasagar Mela) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে রাজ্য পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি(Gangasagar Mela) । গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গঙ্গাসাগর মেলাকে (Gangasagar Mela) সামনে রেখে জলপথে অনুপ্রবেশকারীরা দেশে প্রবেশ করতে পারে। এরপরেই জলপথে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
জলপথে কড়া নিরাপত্তা
নদীপথে বেআইনি অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা রুখতে সুন্দরবন জেলা পুলিশ-প্রশাসন এবং উপকূলরক্ষী বাহিনী সমন্বয়ে কাজ করছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে বঙ্গোপসাগর এবং নদীপথে পেট্রলিং ও সার্চিং অপারেশন চলছে। কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, গোবর্ধনপুর ও সাগর এলাকায় মৎস্যজীবীদের ট্রলার তল্লাশি করা হচ্ছে। বৈধ পরিচয়পত্র এবং লাইসেন্স পরীক্ষা করছে জেলা পুলিশ। মৎস্যজীবীদের অচেনা কিছু দেখলে পুলিশকে অবিলম্বে জানাতে বলা হয়েছে।
সুন্দরবন জেলা পুলিশের সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলায় মোট ১২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নদীপথে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’
বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে ব্যবস্থা
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ রোধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যকে সতর্ক করেছে। সেই নির্দেশ মেনে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, গঙ্গাসাগর মেলার ব্যস্ততার সুযোগে নদীপথে বেআইনি অনুপ্রবেশের চেষ্টা হতে পারে।
মেলা শুরুর আগেই জলপথে বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফ, নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে রাজ্য পুলিশ।
বাংলাদেশি জঙ্গি সংযোগে উদ্বেগ
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া এবং নওদা এলাকা থেকে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও, হাবড়া এবং ক্যানিং থেকে আরও কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, যাদের বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর থেকে রাজ্য পুলিশ গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। জলপথে অনুপ্রবেশ রুখতে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি
তীর্থযাত্রীরা মূলত কাকদ্বীপের লট নম্বর-৮ এবং নামখানার চেমাগুড়ি পথ দিয়ে গঙ্গাসাগর যান। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের জলসীমানা প্রায় ১৫০ কিমি বিস্তৃত হওয়ায় এই এলাকায় বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌবাহিনী কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।
গঙ্গাসাগর মেলার মতো বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য পুলিশ সর্বাত্মক প্রস্তুত। নদীপথে বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে এবং তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নজরদারি আপাতত ‘পাখির চোখ’।