মালদহে তৃণমূল নেতা (TMC Leader) দুলাল সরকারের হত্যাকাণ্ডে ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুরু থেকেই পরিবারের (TMC Leader) দাবি ছিল, হত্যার পিছনে কোনও বড় চক্র সক্রিয়। সেই তত্ত্বেই সায় দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে দুলাল সরকারের (TMC Leader) স্ত্রী চৈতালি সরকারের অভিযোগ ছিল, দলেরই কেউ এই হত্যার সাথে জড়িত। অবশেষে সত্যি হল তার আশঙ্কা। খুনের ঘটনায় (TMC Leader) গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের দুই নেতা।
মঙ্গলবার ২২ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় মালদহ শহরের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরেক তৃণমূল নেতা স্বপন শর্মাকে। জমি দখল ও আর্থিক লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে।
গ্রেফতারের পর মালদহ পুলিশ জানিয়েছে, জমির দাম বৃদ্ধির কারণে এলাকায় প্রমোটিং, শপিং মল নির্মাণ ও কোটি টাকার লেনদেন চলছিল। নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও তাঁর ভাইরা ওই এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল ও ব্যবসা দেখভাল করতেন। অন্যদিকে, নিহত দুলাল সরকার ওই অঞ্চলে তার প্রভাব বিস্তার করছিলেন। জমি ও রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ে এই দ্বন্দ্বই হত্যার কারণ বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
এলাকার কানাঘুষো অনুযায়ী, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও দুলাল সরকারের মধ্যে বহুদিন ধরেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চলছিল। রেলের রেকের কাজ, ঠিকাদারি, ট্রাক লোডিং-আনলোডিংয়ের মতো বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়। ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, “দুলালকে মারার হুমকি আগেই দিয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথ। ভোটের পর তিনি প্রকাশ্যে অনেককে বলেছিলেন, দুলাল সরকারকে খুন করবেন।”
কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী আরও জানান, দ্বিতীয় অভিযুক্ত স্বপন শর্মা একজন পেশাদার কন্ট্রাক্ট কিলার, যিনি একাধিকবার তার উপরও হামলা চালিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করেছেন, এটি কোনও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়, বরং স্বার্থসিদ্ধির জন্য করা হয়েছে।
পুলিশের মতে, এই হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং জমি ও আর্থিক স্বার্থই মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি সরকারের বক্তব্য, “পুলিশের কাছে এখন পুরো বিষয়টি স্পষ্ট। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” তদন্তে নয়া তথ্য সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকাশ্যে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।