প্রসূতি থেকে পথ দুর্ঘটনার শিকার, ডায়েরিয়া থেকে মুমূর্ষু রোগী—চিকিৎসায় অতি গুরুত্বপূর্ণ রিঙ্গার ল্যাকটেট (আর এল) স্যালাইন (Saline)। বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তীব্র সংকটের মধ্যে (Saline)। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর স্বাস্থ্য দফতর পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস-এর তৈরি রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের (Saline) ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এর ফলে জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত ব্যাহত হচ্ছে।
বাঁকুড়া জেলার সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্যালাইন সরবরাহ করা হয় কলকাতার স্বাস্থ্য দফতরের সেন্ট্রাল স্টোর থেকে। এতদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস ওই স্যালাইন সরবরাহ করত। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার জেরে তড়িঘড়ি ওই সংস্থার তৈরি আর এল স্যালাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে স্যালাইন মজুতের সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে ইতিমধ্যেই মজুত থাকা সমস্ত পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি আর এল স্যালাইন ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিকল্প কোনও সংস্থার স্যালাইন সরবরাহ করা শুরু হয়নি। আর এল স্যালাইনের অভাবে বাঁকুড়ার অধিকাংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে স্যালাইনের এই অভাব বড়সড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক স্বীকার করেছেন, “আর এল স্যালাইনের অভাব চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। আমরা দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।” স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্য সংস্থার মাধ্যমে স্যালাইন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে দ্রুত সরবরাহ নিশ্চিত না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিষাক্ত স্যালাইনের জেরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। চার জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিন জনের অবস্থা গুরুতর। রবিবার তিন জন প্রসূতিকে গ্রিন করিডর করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁদের মধ্যে দুজন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন।