মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সংক্রমিত স্যালাইন ব্যবহারের (Saline death) ফলে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থার একাধিক পণ্য (saline death) আগে থেকেই নিষিদ্ধ ছিল। তবে মৃত্যুর পরও রাজ্যের বেশ কিছু হাসপাতালে ওই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারের (saline death) অভিযোগ উঠেছে। নিষেধাজ্ঞার পরেও কীভাবে ওই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছিল একাধিক সরকারি হাসপাতালে সেই নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নভেম্বর মাসে কর্নাটকে এই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এরপর সেখানকার স্বাস্থ্য দফতর পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের কারখানা পরিদর্শন করে গুণগত মান বজায় রাখতে ব্যর্থতার প্রমাণ পায়। কর্নাটক সরকার সংস্থার ১৪টি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং রাজ্যের সরকারি পোর্টালে কালো তালিকাভুক্ত করে।
এদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরও ওই সংস্থার স্যালাইন বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতির প্রশ্ন উঠেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’-এর নমুনা স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হলেও এখনও রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
গত বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চার প্রসূতিকে সন্তান জন্মদানের পর স্যালাইন দেওয়া হয়। এরপর তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় এবং তিনজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের গ্রিন করিডর করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আনা হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে আনা তিন প্রসূতির মধ্যে দুই প্রসূতি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে। একজন আইটিইউ-তে চিকিৎসাধীন। সিসিইউতে চিকিৎসাধীন দুই প্রসূতির মধ্যে একজনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। রোগীদের সংক্রমণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য হিমোগ্লোবিন, আরবিসি-সহ একাধিক রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করতে আজ পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠকে বসেছে। বোর্ডে রয়েছেন সিসিইউ, অ্যানাস্থেসিস্ট, নেফ্রোলজি, স্ত্রীরোগ এবং মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
২০২৩ সালের মে মাসে কর্নাটকের চারটি জেলায় প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার ব্যাচের ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ সরবরাহ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল। তখনও ২৭টি অভিযোগ জমা পড়ে। সংক্রমিত স্যালাইন নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাফিলতি এবং নিষিদ্ধ পণ্য ব্যবহারের দায়ে স্বাস্থ্য দফতরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে পরিবার ও সাধারণ মানুষ।