রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে (Rajiv Kumar)। কোথাও পুলিশকে ঘিরে হেনস্থার অভিযোগ, তো কোথাও সরাসরি মারধর বা হামলা (Rajiv Kumar)। তারই মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ায় এক খুনের আসামি সাজ্জাক পুলিশের ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (Rajiv Kumar)। শিলিগুড়িতে আহত দুই পুলিশকর্মীকে দেখতে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার (Rajiv Kumar)। তিনি (Rajiv Kumar) বলেন, দুষ্কৃতীরা যদি একটা গুলি চালায়, পুলিশকর্মীরা চারটে গুলি চালাবে।
বুধবার বিকেলে ইসামপুর আদালত থেকে রায়গঞ্জ জেলে ফেরার পথে পাঞ্জিপাড়ার জাতীয় সড়কে সাজ্জাক নামে এক খুনের আসামি প্রিজন ভ্যানে থাকা পুলিশকর্মীদের গুলি করে পালিয়ে যায়। জানা গেছে, সাজ্জাকের হাতে জেল লকআপে কেউ আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল। সেই অস্ত্র চাদরের নিচে লুকিয়ে রেখেছিল সে। গুলিবিদ্ধ দুই পুলিশকর্মী নিশিকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্যকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক সাজ্জাকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এই ঘটনার পর পুলিশের মনোবল চাঙ্গা করতে শিলিগুড়িতে আহত পুলিশকর্মীদের দেখতে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট বলছি, দুষ্কৃতীরা যদি পুলিশের ওপর ১টি গুলি চালায়, তবে পুলিশ ৪টি গুলি চালাবে। আমরা গুলি চালানোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। দুষ্কৃতীদের কড়া হাতে মোকাবিলা করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।”
ডিজির এই বক্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, রাজ্যে পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শাসকদলের সুরক্ষা প্রদান নীতির ফল। বিরোধীরা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার থানায় হস্তক্ষেপ করেছেন। এমনকি, পুলিশকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতাদের। কিন্তু এর পরেও কোনও ক্ষেত্রে শাস্তি হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাঁদের মতে, শাসকদলের প্রশ্রয়ে দুষ্কৃতীদের মনোবল বেড়েছে।
এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী শিবিরের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে—পুলিশ যদি নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে, তবে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা কীভাবে হবে? ডিজির কড়া বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলির যথাযথ সমাধান কতটা সম্ভব, সেটাই এখন দেখার।
জেল লকআপের মধ্যেই সাজ্জাকের হাতে কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশের গাফিলতি রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে সাজ্জাককে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য জেলায় জেলায় বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে। ডিজির কঠোর বার্তা বাস্তবে কতটা কার্যকর হয়, তা সময়ই বলবে।