নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঁথিঃ খেজুরি থেকে মৎস্যজীবিদের জালে উদ্ধার হল বাচ্চা কুমির। খবর ছড়িয়ে পড়তে কাতারে কাতারে মানুষ ভীড় জমায়। ঘটনার জানতে পেরে হাজির হয় বনদপ্তরে অধিকারীরা।খেজুরি তথা কাঁথির সমুদ্র উপকূলে কুমির ধরা পড়ার ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম।
বর্তমানে কুমিরটি বন দফতরের খেজুরি নিজকসবা(খেজুরি) বিট অফিসের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। কুমিরটি লম্বা প্রায় এক ফুট। এই অঞ্চলে প্রথম বারের মতো কুমির ধরা পড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দা ও বন দফতরের কর্তাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গিয়েছে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে যে শনিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি নিচকসবা গ্রামের বাসিন্দা মাছ ধরে জীবিকা নিবারন করেন। এলাকায় বাসিন্দা মৎস্যজীবী নভেন্দু দাস পাঁচুড়িয়া সমুদ্র সংলগ্ন খাঁড়িতে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর জালে উঠে আসে কুমিরটি। নভেন্দুবাবু কুমিরটি নিয়ে এসে তাঁর বাড়িতে একটি গামলায় রাখেন।
কুমির ধরা পড়েছে, এমন খবর পেয়ে বহু মানুষ সেটি দেখতে ভিড় জমায় এলাকায় বাসিন্দারা। এলাকায় বাসিন্দারা মোবাইলে ক্যামেরা বন্দি করতে লেগে পড়েন। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। দ্রুত ঘটনার স্থলে ছুটে আসেন বনদফতরের অধিকারীকেরা।
জেলা বন দফতরের অতিরিক্ত আধিকারিক বলরাম পাঁজা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ছুটে আসেন। কুমিরটিকে মৎস্যজীবি নভেন্দুবাবুর কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন কুমিরটিকে এখন কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন বন দফতরের কর্তারা। চিকিৎসার পর সমুদ্রের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়ছে।
নিজকসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা শিক্ষক সমুদ্ভব দাশ বলেন, কুমির ধরা পড়েছে, এমন খবর পেয়েই আমরা এলাকায় যাই। মেহেদিনগরের ওই অংশে আরও কুমির রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য বন দপ্তরের আধিকারিকদের আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরির মেহেদিনগরের একটি বিরাট অংশ জুড়ে ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং ছোট ছোট খাঁড়ি রয়েছে। সেখানে কাঁকড়া এবং মাছ ধরার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা ভিড় জমান। সেই খাঁড়িতেই এদিন কুমিরটিকে পাওয়া যায়।
বন দফতরের কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, সুন্দরবনের দিক থেকে কোনওভাবে সমুদ্রে চলে আসতে পারে কুমিরটি। এখানে ঘন ম্যানগ্রোভ অরণ্য আর খাঁড়ি রয়েছে। তা কুমিরের থাকার পক্ষে আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছে। এই বিষব বন দফতরের আধিকারিক বলরামবাবু বলেন, “একে ‘সল্ট ওয়াটার ক্রোকোডাইল’ বলা হয়। আমরা মনে করছি, কাছাকাছি অঞ্চলে মা কুমিরও রয়েছে। না হলে বাচ্চা কুমির থাকা সম্ভব নয়। এছাড়া এখানে আরও কুমিরের বাচ্চাও থাকতে পারে না।”