কলকাতা: ফের কলকাতায় (Kolkata) বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটল। এবার ঘটনাস্থল উত্তর কলকাতার মুক্তিরামবাবু স্ট্রিট। শনিবার দুপুর নাগাদ আচমকাই ভেঙে পড়ে একটি পুরনো বাড়ির সামনের অংশ, যার ফলে আহত হন এক শ্রমিক। দুর্ঘটনার পরপরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল অত্যন্ত জনবহুল হওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
কলকাতা (Kolkata) পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই বাড়িটির সংস্কারের কাজ চলছিল। এদিন আচমকাই বাড়ির সামনের অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নীচে এক শ্রমিক চাপা পড়েন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করেন এবং পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। আহত শ্রমিককে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ধ্বংসস্তূপের ভিতরে আর কেউ আটকে নেই।
ক্রমশ বাড়ছে পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা
সম্প্রতি শহর কলকাতায় পরপর বাড়ি হেলে পড়ার বা ধসে পড়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগেই দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীন এলাকায় একটি বাড়ি হেলে পড়ে এবং তার একাংশ ভেঙে যায়। এরপর ট্যাংরার একটি বহুতল ভবন হেলে পড়ার ঘটনা সামনে আসে। সেই ঘটনার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এখনও সেই বিতর্কের রেশ কাটেনি, এর মধ্যেই উত্তর কলকাতার এই নতুন ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতার বহু পুরনো বাড়ির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, জল জমে কাঠামোর দুর্বল হয়ে পড়া, এবং অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণের ফলে এই ধরনের দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে। প্রশাসনের তরফ থেকে পুরনো বাড়িগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও দ্রুত পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ ও প্রশাসনের ভূমিকা
এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুরনো বাড়িগুলির সংস্কার ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসন উদাসীন। তারা বলছেন, বহুবার বাড়ির বিপজ্জনক অবস্থা সম্পর্কে পুরসভাকে জানানো হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরের পুরনো ও বিপজ্জনক ভবনগুলির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে এবারের দুর্ঘটনা সেই উদ্যোগের জরুরিতা আরও একবার তুলে ধরল।