খবরএইসময়,নিউজ ডেস্কঃ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় চমক। রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চলেছেন মুকুল রায়ের পুত্র তথা বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। খুব শীঘ্রই সাংবাদিক বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি জানিয়ে দেবেন বলে খবর।
রাজ্যে পালাবদলের সময়ে ২০১১ সালে বিধায়ক হয়েছিলেন শুভ্রাংশু। তাঁর বাবা মুকুল রায় তখন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। রাজ্যের শাসকদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং দলের প্রচলিত ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ ছিলেন মুকুল। তারপরে ২০১৬ সালেও বীজপুর থেকেই বিধায়ক হয়েছিলেন হাপুন।
তবে নিজের রাজনৈতিক জীবনের উত্থানে বাবার কোনও ভূমিকা নেই বলেই বরাবর দাবি করে এসেছেন শুভ্রাংশু।তবে কারণ হিসেবে তিনি যা জানান, ‘বাবা আমাদের বাড়ির অতিথির মত ছিলেন। তিনি বোধহয় একেবারেই ভুলে গিয়েছিলেন যে তাঁর একটি পরিবার আছে। তাঁর ধ্যান- জ্ঞানই ছিল শুধু দল তৃণমূল ।
বলতে দ্বিধা নেই যে, আমি আমার বাবার থেকে সেই সময় ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। বাবা তৃণমূল কংগ্রেসে থাকতে দলের কাজে বাড়ি থেকে ওই যে বের হতেন, আবার কবে বাড়িতে ফিরবেন তার কোনও ইয়ত্তা ছিল না। আজ হুগলী তো কাল কোচবিহার ! যাওবা কখনও সখনও বাড়ি আসতেন , তার আগে থেকে আবার দলের নেতা- কর্মীরা বাবার সাথে যোগাযোগ করে বাড়িতে এসে বসে থাকতেন বাবার সাথে কথা বলার জন্যে।তারপর রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুম । আবার পরদিন সকালে উঠেই বেরিয়ে যেতেন। কিছু জানতে চাইলেই বলতেন, বড় হয়েছ। নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে কাজ কর অন্যদের মত।তাহলে আপনারাই বলুন আমার ব্যপারে বাবার ভুমিকা কতটা !’
হাপুন আরও বলেন, ‘দেখুন শিক্ষাগত যোগ্যতার নীরিখে অন্য পেশায় যাওয়ার ক্ষমতা আমার আছে, কিন্তু আমি যাইনি। কারণ সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আমি ইন্সপায়ারড হয়েছিলাম। মানুষের পাশে থেকে মানুষের হয়ে কাজ করব বলে। আজও তাই মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্যই কাজ করে চলেছি।’
……………………….Advertisement…………………….
নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক বলে দাবি করা শুভ্রাংশুকে ২০১৯ এ ব্যারাকপুর লোকসভা নির্বাচনের গুরু দায়িত্ব দিয়েছিল তৃণমূল। বিপুল ব্যবধানে দলকে লিড দেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল শুভ্রাংশুর মুখে। যদিও তা হয়নি। ব্যারাকপুর থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং।
তৃণমূলের টিকিটে দু’বার জিতলেও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে বিজেপি শিবিরে নাম লেখান শুভ্রাংশু। ভোটের আগেও তাঁর বিজেপি যোগ নিয়ে জল্পনা চলছিল। এরপরে ছয় বছরের জন্য শুভ্রাংশুকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল।
শোনা গিয়েছিল যে বিজেপিতে বিশেষ কদর পাচ্ছেন না শুভ্রাংশু রায়। ফের তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। মুকুল রায়ের সঙ্গেও তৃণমূল যোগের খবর রটেছিল। এরই মাঝে মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে আসীন করে বিজেপি। তারপর থেকে অবশ্য মুকুল-শুভ্রাংশুর তৃণমূল যোগের কথা শোনা যায়নি।
এরই মাঝে বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে চাঞ্চল্যকর পোস্ট করেন শুভ্রাংশু। অনুগামীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জানতে চান, “রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিলে কেমন হয়?” যা নিয়ে শুরু হয় নয়া জল্পনা।
এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে শুভ্রাংশু জানান, “এখনই বা আজ কিছুই বলছি না। কয়েকদিন পরে সব বলব।” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “এবার একটু পরিবারকে সময় দিতে হবে। সেই কারণেই একটা বড় সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। যা বলার কাল-পরশু বলব।”