Trump Tariff: ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কাছে মাথা নত করল এই দেশ, তুলে নিল সমস্ত কর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যারিফ (আমদানি শুল্ক) (Trump Tariff) আরোপের ঘোষণা করেছেন, যা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তার এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। ভারত সহ বিশ্বের অনেক দেশের শেয়ার বাজারে বড় পতন দেখা গেছে। ট্রাম্পের চাপে জিম্বাবুয়ে আমেরিকান পণ্যের উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে।

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন যে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি (Trump Tariff) কেবল কানাডার জন্যই নয়, বরং আমেরিকার জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। যদিও ট্রাম্প দাবি করছেন যে এই সিদ্ধান্ত আমেরিকাকে আরও ধনী করবে, বিশ্বজুড়ে বাজারের অবস্থা এবং নেতাদের বক্তব্য এর বিপরীত বলে মনে হচ্ছে।

শেয়ার বাজারে বড় পতন

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। সোমবার এশিয়ার বাজারগুলিতে তীব্র পতন দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ৬.৩% এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং ১০% কমেছে। ভারতের শেয়ার বাজারও খোলার সাথে সাথে প্রায় ৫% কমে যায়।

শুক্রবার আমেরিকার সমস্ত প্রধান স্টক সূচক ৫% এরও বেশি কমেছে। ২০২০ সালের পর থেকে S&P ৫০০ সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহের সম্মুখীন হয়েছে। JP Morgan Bank সতর্ক করেছে যে এই শুল্কের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার সম্ভাবনা ৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।

জিম্বাবোয়ে ট্রাম্পকে খুশি করতে ব্যস্ত

জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা পণ্যের উপর শুল্ক তুলে নিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্তে সারা বিশ্বের মানুষ হতবাক। বিশেষ করে জিম্বাবোয়ের পণ্যের উপর ট্রাম্প ১৮% শুল্ক আরোপের পর, এটিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ মানাঙ্গাগওয়া লিখেছেন, “এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধি করবে এবং আমাদের দেশের রপ্তানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।” তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন যে এই সিদ্ধান্ত জিম্বাবোয়ের জন্য কোনও বড় অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে না। সরকারি নীতির সমালোচক এবং সাংবাদিক হোপওয়েল চিনোনো বলেন, এসবই ট্রাম্পকে খুশি করার প্রচেষ্টা।

কানাডার পাল্টা আক্রমণ

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ট্রাম্পের শুল্ক নীতি (Trump Tariff) সম্পর্কে একটি জোরালো বিবৃতি দিয়েছেন। “এই শুল্ক কানাডায় চাকরির উপর প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু আসল ক্ষতি হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে,” কার্নি বলেন। তিনি বলেন, এর লক্ষণ ইতিমধ্যেই আর্থিক বাজারে দেখা দিতে শুরু করেছে, যেমন আমেরিকায় চাকরি হারানো, মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি এবং মন্দার হুমকি। ব্রেক্সিটের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি আগেও এটা ঘটতে দেখেছি। তারপরও ধীরে ধীরে এর প্রভাব দেখা গেছে। এখন আমেরিকার অবস্থাও একই রকম হতে চলেছে।”

ট্রাম্প বিবৃতিতে এই কথা বলেছেন

রবিবার গভীর রাতে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে শুল্ক (আমদানি শুল্ক) আরোপের ফলে আমেরিকায় চাকরি এবং বিনিয়োগ ফিরে আসবে। ট্রাম্প সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “কখনও কখনও কিছু ঠিক করার জন্য আপনাকে ওষুধ খেতে হয়।” তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, যেমন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেস্যান্ট এবং বাণিজ্য সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লুটনিক, মন্দার আশঙ্কাকে খাটো করে দেখেছেন এবং শুল্ক (Trump Tariff) আরোপের ন্যায্যতা প্রমাণ করেছেন। কিন্তু বিশ্বের অনেক বড় নেতা এবং শেয়ার বাজার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তিত। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে ট্রাম্পের এই “ঔষধ” বিশ্বের জন্য বেশ তিক্ত প্রমাণিত হচ্ছে।