হরিয়ানার কৈথাল জেলায় জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুতর বিষয় সামনে এসেছে। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির (Pakistani Spy) অভিযোগে ২৫ বছর বয়সী দেবেন্দ্র সিং ধিলনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গুহলা থানা এলাকার মস্তগড় গ্রামের বাসিন্দা দেবেন্দ্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামরিক ক্যাম্প এবং সংবেদনশীল স্থানের ছবি এবং ভিডিও পাকিস্তানে পাঠাচ্ছিলেন। তিন দিনের মধ্যে হরিয়ানায় গুপ্তচরবৃত্তির (Pakistani Spy) অভিযোগে এটি দ্বিতীয় গ্রেপ্তার, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দিয়ে তদন্ত শুরু
১১ মে, একজন নিরাপত্তা এজেন্ট গুহলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যে দেবেন্দ্রের কাছে অস্ত্রের লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও তিনি ফেসবুকে পিস্তল এবং বন্দুক সহ ছবি শেয়ার করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ ১৩ মে দেবেন্দ্রকে আটক করে এবং দুই দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তদন্তের সময়, তার মোবাইল ফোন থেকে পাকিস্তানে সংবেদনশীল তথ্য পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর পর, সাইবার থানায় একটি নতুন মামলা দায়ের করা হয় এবং তাকে তিন দিনের অতিরিক্ত রিমান্ডে নেওয়া হয়।
নানকানা সাহিব যাত্রা এবং হানিট্র্যাপ
দেবেন্দ্র সিং ধিলন পাতিয়ালার একটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বাবা কৃষিকাজের সাথে জড়িত। ২০২৪ সালের নভেম্বরে, তিনি কর্তারপুর করিডোর হয়ে নানকানা সাহিবে একটি ধর্মীয় তীর্থযাত্রায় যান। এই সময় একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে পাকিস্তানে যোগাযোগের জন্য একটি নম্বর দেয়। যখন সে সেখানে পৌঁছায়, তখন কিছু লোক তাকে হানিট্র্যাপে আটকে ফেলে। এক মেয়ের মাধ্যমে সে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সংস্পর্শে আসে এবং গুপ্তচরবৃত্তির (Pakistani Spy) ফাঁদে পা দেয়। ভারতে ফিরে আসার পরও, তিনি পাকিস্তানি এজেন্টদের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখতেন এবং সামরিক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য ভাগাভাগি করতে থাকেন।
মোবাইল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তদন্ত
কৈথালের পুলিশ সুপার আস্থা মোদী জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অস্ত্রের ছবি পোস্ট করার জন্য দেবেন্দ্রকে প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার গুপ্তচরবৃত্তির (Pakistani Spy) কার্যকলাপ প্রকাশ্যে আসে। তার মোবাইল ফোনটি জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, তথ্যের বিনিময়ে তিনি কত টাকা পেয়েছেন তা জানতে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দেবেন্দ্র কতটা এবং কী ধরণের তথ্য ভাগ করে নিয়েছিলেন তাও পুলিশ তদন্ত করছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের দাবি
হরিয়ানায় সাম্প্রতিক গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে। পানিপথে নওমান ইলাহির গ্রেপ্তারের পর, এখন কৈথালে দেবেন্দ্রের গ্রেপ্তার স্থানীয় প্রশাসনকে নিরাপত্তা প্রোটোকল আরও কঠোর করতে বাধ্য করেছে। পুলিশ একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করেছে যারা এই গুপ্তচরবৃত্তি নেটওয়ার্কের অন্যান্য সম্ভাব্য সদস্যদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছে। এই ঘটনাটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তুলে ধরে এবং গোয়েন্দা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।