নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুরঃ তৃণমূল দলের কোনো নেতার ঋণ আর বাকি রাখবেন না ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত ।কড়ায় গন্ডায় দলের নেতাদের কাছে নিজের চিকিৎসার সময় ধার নেওয়া প্রতিটি পাই পয়সা অতি দ্ৰুত শোধ করতে নেমে পড়েছেন শীলভদ্র দত্ত ।আর এর প্রথম ধাপ হিসেবে, ব্যারাকপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম দাসের দু লক্ষ টাকা পরিশোধ করলেন তিনি ।
জানা গিয়েছে,বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত অসুস্থতা জনিত কারণে তৃণমূল দলের কাছে তাঁর নেওয়া আর্থিক ঋণ পরিশোধ করার দায়বদ্ধতার মধ্যে দিয়ে তিনি দলত্যাগ করার আগেই বার্তা দিলেন তৃণমূলের ঋণ আর তিনি কাঁধে বইবেন না । গতবছর জানুয়ারি মাসে তার লিভার প্রতিস্থাপন হয় ।চিকিৎসার সময় যে টাকা ধার নিয়েছিলেন তার মধ্যে শুক্রবার বারাকপুরের চেয়ারম্যান উত্তম দাসের কাছে দু’লক্ষ টাকা ফেরত দেন।
বিশ্বস্ত সুত্রে খবর, একসময়ের সহকর্মীদের মধ্যে বাকি প্রাপকদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ফোন করছেন তিনি ।অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য শীলভদ্র দত্ত কে বেশকিছু টাকা ধার করতে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় নেতাদের কাছ থেকে । জানা গেছে,প্রায় ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা তাকে ধার করতে হয়। তার চিকিৎসার খরচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলীয় স্তরে ।
তিনি ধারবাকি রাখতে নারাজ, জানা গেছে নিজের একদা কাছের মানুষেরা যেন এনিয়ে মুখর না হন তাঁর জন্য তিনি মরিয়া । তিনি যেনতেনপ্রকারেন দলীয় টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিন বারাকপুরের চেয়ারম্যান উত্তম দাসের কাছে প্রথমে দু লক্ষ টাকার চেক পাঠালে তিনি ফেরত দিয়ে বলেন ক্যাশ টাকা নিতে চান ।পরে বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত নিজে টাকা তুলে নগদ টাকা উত্তম দাসের কাছে পাঠিয়ে দেন ।
বাকি পাওনাদারদের মধ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পার্থ ভৌমিক নারায়ণ গোস্বামী দের মত তৃণমূল নেতা রয়েছে ।ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তির ওপরে ঋণের ছায়া আসতে দিতে নারাজ তিনি । একে একে দ্ৰুত সবটাকা পরিশোধ করার লক্ষ্য নিয়ে শীলভদ্র দত্ত নিজের অবস্থান অনেকটাই পরিষ্কার করছেন । প্রসঙ্গত, তাঁর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে রাজনৈতিক আলোচনা সারতে দেখা করতে গিয়ে হালে পানি না পেয়ে সম্প্রতি ফিরে এসেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।তার আগে ব্যারাকপুরে শীলভদ্র দত্তের খেই পায় নি টিম পিকেও ।ফলে রাজনৈতিক ডামাডোলের বাজারে ও তৃণমূল নেতাদের বিজেপি মুখী হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণে শীলভদ্র দত্তের ঋণশোধ কর্মসূচী অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । তবে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের সাথে শীলভদ্রকে নগদ টাকা দিয়ে সাহায্যের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে পার্থ বলেন, “সাহায্য বলতে , টাকা দিয়ে আমি শীলদা’কে সাহায্য করিনি। উনি কেন বলেছেন তা আমি বুঝতে পারছি না।”
এদিকে শীলভদ্র দল ছাড়বেন এমন গুঞ্জন বহুদিন ধরেই মুখরিত। তবে কি দল ছাড়ার পাকাপোক্ত পুষ্টিকরণের আগেই দলের নেতাদের বকেয়া ঋণ শোধ করতে চাইছেন শীলভদ্র, নাকি তিনি তৃণমূল থেকে দূরত্বের নতুন মাইলফলকের মধ্যে দিয়ে দল ছাড়ার গুঞ্জনে নতুন মাত্রা দিলেন ? এর উত্তর তিনি কবে দেন সেটাই এখন দেখার।